parbattanews

কাউখালীতে উপজাতীয় নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ: থানায় মামলা

আসামী পক্ষের দাবী জমি সংক্রান্ত বিরোধ: মামলার এজহারের উল্লেখিত বাদীর নাম ঠিকানা ভূয়া


কাউখালী প্রতিনিধি:
রাঙামাটির কাউখালীতে এক উপজাতীয় নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯ জুলাই উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের মাগরামাছড়া নামক স্থানে এঘটনা ঘটে বলে মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ঐ মহিলা বাদী হয়ে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ আসামীকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখে বলে জানিয়েছেন কাউখালী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ৯ জুলাই সকাল সাড়ে ন’টায় উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের বড়ইছড়ি গ্রামের সাচিংউ মারমার স্ত্রী ২ সন্তানের জননী (২৫) কাউখালী বাজার থেকে বাড়ী যাওয়ার সময় মাগরামা ছড়া নামক স্থানে পৌঁছলে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কাশখালী এলাকার মোঃ আব্দুল বারেকের ছেলে মোঃ সাকিব (১৯) তাকে জড়িয়ে ধরে শরীরের কাপড় খুলে ফেলে এবং পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ফেলে দেয়। পরে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এসময় ঐ মহিলা চিৎকার শুরু করলে পাশ্ববর্তী মংচিং মারমা শামীম (৪৪) ও চাইহ্লা প্রু মারমা (৩২) ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে কাউখালী থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে মামলার এজহারে উল্লেখিত বাদীর যে নাম, ও স্বামীর নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে যথেষ্ট গড়মিল দেখা গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা বাদীর বয়স নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় ভোটার তালিকা খুঁজে দেখা গেছে এ নামের কেউ কলমপতি ৩নং ওয়ার্ডে বসবাস করে না এবং এলাকার ভোটারও না।

এবিষয়ে কলমপতি ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার পাইচামং মারমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা দীর্ঘ ১০-১৫ বৎসর যাবৎ ঐ এলাকায় বসবাস করে। ৩নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং এ এলাকার ভোটার। প্রতিটি নির্বাচনেই তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও কিভাবে তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এমন প্রশ্নের জবাবে মেম্বার জানান, হয়তো তারা অন্য জায়গার ভোটার এতদিন প্রক্সি ভোট দিয়েছে।

এদিকে এজহারে বাদী বিবাদীর বয়স ১৯ বৎসর উল্লেখ করলেও জন্ম নিবন্ধন খুঁজে দেখা যায় তার ১৬ বছর ৮ মাস। তাছাড়া বাদী মামলায় তার বয়স ২৫ বৎসর উল্লেখ করলেও তা নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ করছে আসামী পক্ষ। প্রকৃত কাগজপত্র হাতে আসলে তাও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে অভিযুক্ত আসামী সাকিবের বাবা মোঃ আব্দুল বারেক জানান, এটি সম্পূর্ণ ষড়ন্ত্রমূলক মামলা। তিনি জানান, এজহারে বাদীর পক্ষে মংচিং মারমা (শামীম) নামে যে নাম ব্যাবহার করা হয়েছে তার সাথে আমার দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে।

তিনি জানান, উল্লেখিত মংচিং এর কাছ থেকে ৫ বৎসর পূর্বে আমি এক একর জমি ক্রয় করেছি। কিন্তু পাঁচ বৎসর পার হলেও উক্ত জমি আমাকে রেজেষ্ট্রি করে দেয়নি। তাছাড়া আমার মেঝো ছেলের সাথে দোকানের বকেয়া টাকা নিয়ে বাদীর সাথে কয়েক দফা বাকবিতন্ডাও হয়।

বারেক জানান, বাদী ও মংচিং মারমা মিলে আমাকে জমি এবং দোকানের বকেয়া টাকা না দিতেই মূলত এ মামলা সাজানো হয়েছে। নাহলে ১৬ বছরের কিশোর তার মায়ের সমতুল্য ৩৫ উর্ধ এবং শারিরীক গঠনে তার চেয়ে শতগুণ শক্তিশালী একজন মহিলাকে কিভাবে ধর্ষণ করে। মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট আসলেই আপনারা প্রকৃত সত্য জানতে পারবেন।

Exit mobile version