কাপ্তাইয়ের একজন স্বাস্থ্যকর্মী ইপিআই সেবা দিতে ছুটছে প্রত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে
রাঙ্গামাটি কাপ্তাই উপজেলার ৪নং ইউনিয়নের সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল ও দুর্গম এলাকায় বিরামহীনভাবে ইপিআই ও টিটি টিকা সেবা দিয়ে চলছে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী সনজিত কুমার তনচংগ্যা। কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা দুর্যোগেও এ সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকে না নিয়ম অনুযায়ী টিকা দিতে হয়।
কাপ্তাইয়ে ৪নং ইউনিয়নের সবচেয়ে দুর্গম এলাকা ও প্রত্যন্ত অঞ্চল (১,২,ও ৩নং ওয়ার্ড) এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ওয়ার্ড-১, হরিণছড়া,ভায্যাতলী ও বারুদগৌলা মৌজা এলাকা। এখানে প্রায় তিন হাজার উপজাতীয় সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস। অন্য কোন সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে বসবাস করেনা। ওই দুর্গম এলাকাটি কাপ্তাই জেটিঘাট হতে দূরত্ব প্রায় ৪০কিঃ মিঃ ও বেশি। বাহন একমাত্র ইঞ্জিন চালিত নৌকা, কোন সড়ক যোগাযোগ নেই বলেই চলে। এককথায় বলাযায় একেবারে বিচ্ছিন্ন এলাকা।
ইপিআই শিশু টিকা, টিটি টিকাসহ অন্যান্য সেবা দিতে সঠিক সময়ে বাহন না পাওয়ায় বিভিন্ন সময় টিকা সেবা দিতে গন্তব্যস্থানে পৌছাতে বা আসতে নিজ খরচে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে হয় ওই স্বাস্থ্যকর্মীর। কাপ্তাই ইউপি এলাকার ১,২,ও ৩নং ওয়ার্ডের দুর্গম পাড়াগুলো মধ্যে রয়েছে ভাইবোনছড়া, হরিণছড়া (হেডম্যানপাড়া), মোহনলাল পাড়া,লক্ষীন ধন কার্বারী পাড়া, নোয়াপাড়া, গুড়াছড়া মূখ পাড়া, তাইতংপাড়া, ভাঙ্গামুড়া বড়পাড়া, বেচারাম পাড়া , পাংখোয়া পাড়া, নোয়ামনি মেম্বার পাড়া, বেথাল পাংখোয়াপাড়া, অংগইয়্যা পাড়া,গাছকাটা ছড়া(কুদুকছড়ি), হেডম্যানপাড়া, কিলাছড়ি ভাবনা কেন্দ্র পাড়া,গোলক ধনপাড়া, হাতিমারা শুভধন পাড়া,নারশ্য পাড়া ও বারুদগৌলা মৌনপাড়া সহ প্রমুখ। প্রতিটি পাড়ার দুরত্ব অনেক, এক পাহাড় হতে অন্য পাহাড় আবার নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় গিয়ে সেবা দিতে অনেক সময় লেগে যায়। ওই এলাকার ইউপি সদস্য নবীন মেম্বর, সুইপ্রু মারমা ও টিকা সেবাকারী বরণা তনচংগ্যা, সাচিংমা মারমা ও ভাঙ্গামুড়ার বিশন তনচংগ্যা বলেন, উক্ত স্বাস্থ্য সহকারী আমাদের প্রতিটি দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরলসভাবে টিকাসহ সকল স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ আমাদের দিচ্ছে। যা আমরা বিগত দিনগুলো তে এরকম সেবা পাইনি বলে উল্লেখ করে।
এদিকে স্বাস্থ্য সহকারী সনজিত কুমার তনচংগ্যার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,কাপ্তাইয়ে সব চেয়ে দুর্গম হল(১,২,ও ৩ নং ওয়ার্ড)।মহামারি করোনা ভাইরাস কালীন সরকার বিভিন্ন সময়কালীন লকডাউন ঘোষণা করলেও আমরা ইপিআই ও টিটি টিকা বন্ধ রাখেনি। বিভিন্ন দুর্গম পাড়ায়,পাড়ায় গিয়ে স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়েছি এবং টিকা কার্যক্রম চালিয়েছি। কাজ শেষ হলে আসতে না পাড়ায় কোন সময় না খেয়ে বা বাসা হতে নিয়ে যাওয়া শুকনা খাবার খেয়ে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে রাত যাপন করেছি বলে উল্লেখ করে।
আমাদের দুঃখ কষ্ট কেউ জানতে চায়না বলে দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়েন। তিনি সরকারের নিকট একটি দাবি জানান, সারা বাংলাদেশে যারা এ স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাদের বেতন ও টেকনিকেল পদমর্যাদা বাস্তবায়ন করলে এ সেবা সার্থক হবে।