parbattanews

কাপ্তাইয়ের পাহাড়ে মরুর খেজুর

Kaptai Pic- 01 (Soudi Khejur)

মো. রেজাউল করিম, কাপ্তাই:
সৌদি আরবের মরুভূমির খেজুর এখন ফলতে শুরু করেছে কাপ্তাইয়ে পাহাড়ী এলাকায়। কাপ্তাইয়ে রাইখালী কৃষি গবেষনা কেন্দ্রের বাগানে কৃষি বিজ্ঞানীদের সফল গবেষনায় সৌদি আরব থেকে গাছ এনে রোপন করার মাত্র তিন বছরের মধ্যে এসব সৌদি খেজুর গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে। খেজুর গাছগুলো মাটি থেকে মাত্র এক ফুট উচ্চতায় বড়হওয়ার পর ফল ধরা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃষিবিদরা।

কাপ্তাই কৃষি গবেষনা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.্এসএম হারুনুর রশীদ জানান, ব্যাক্তিগত উদ্যোগে সৌদিআরব থেকে মাত্র দুটি খেজুর গাছের চার এনে রাইখালী কৃষি গবেষনা কেন্দ্রের বাগানে রোপন করা হয়। পরবর্তীতে এই দুটি গাছ থেকে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় আরও প্রায় শতাধিক চারা উৎপাদন করে গবেষনা কেন্দ্রে একটি স্বতন্ত্র সৌদি খেজুরের বাগান গড়ে তোলা হয়।

বর্তমানে গবেষনা কেন্দ্রের পুকুর তীরে ১৮টি, ও অন্যান্যস্থান মিলিয়ে প্রায় শতাধিক সৌদি খেজুর গাছ সফল ভাবে ফল ধরার উপযোগী হয়ে বেড়ে উঠেছে।
গবেষনা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদতত্ত্ব) শ্যাম প্রসাদ চাকমা জানান, সৌদি আরব থেকে আনা মরুর খেজুর গাছ কাপ্তাইয়ে রোপন করার মাত্র তিন বছরের মধ্যে স্বাভাবিক পরিচর্যায় মাত্র কয়েকফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি ঘটার পর ওইসব খেজুর গাছে এখন বড় বড় আকৃতির খেজুর ধরতে শুরু করেছে। মাটি থেকে মাত্র একফুট উচ্চতায় খেজুর গাছে এখন সৌদি খেজুর পাওয়া যাচ্ছে।

গবেষনা বাগানের প্রায় শতাধিক গাছের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ টি গাছে এখন খেজুর ধরেছে। এখনো খেজুরগুলো কাঁচা থাকায় খাওয়ার উপযুক্ত না হলেও আগামী রমজান মাসের মধ্যেই গাছে সৌদি খেজুর পাকতে শুরু করবে।
কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহাঙ্গীর আলম জানান, মরুভূমির পরিবেশে উপযোগী খেজুর গাছ গুলো কাপ্তাইয়ের পাহাড়ী মাটিতে রোপন করার পর সফলভাবে বেড়ে উঠেছে এবং ফল ধরতে শুরু করেছে। এটি একটি বড় সাফল্য। আরো বিস্তৃত গবেষনার মাধ্যমে সৌদি খেজুর পাহাড়ী মাটিতে রোপন ও চার উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়ে সমগ্র পার্বত্য এলাকায় এই খেজুরের প্রজাতী ছড়িয়ে দেয়া হলে সৌদি আরবের মতই বাংলাদেশে আরবের খেজুরে সয়লাব হবে।

কৃষি বিজ্ঞানী ড. হারুনুর রশীদ জানান, কাপ্তাই থেকে সৌদি খেজুরের সফল জাত উদ্ভাবনের জন্য গবেষনা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। শতাধিক খেজুর গাছে আরবের খেজুর ধরাতে সক্ষম হওয়ায় গবেষনা সফলতার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। ড. হারুন জানান, বর্তমানে কাপ্তাইয়ে শতাধিক বাগানের খেজুর গাছের ফলন দেখে সত্যি বিস্মিত হতে হয়। মরুভুমির সাথে মানানসই কোন খেজুর গাছে পাহাড়ী মাটিতে সফলভাবে ফল ধরতে শুরু করেছে। বর্তমানে কাপ্তাইয়ে তিনবছর বয়সী গাছে খেজুর পাওয়া যাচ্ছে। গাছের বয়স বাড়লে খেজুরের ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি এই খেজুরের মূল প্রজাতী উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। এতে সারা দেশে ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন সৌদি খেজুর সফলভাবে দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

Exit mobile version