কাপ্তাইয়ের রাইখালীতে এক মারমা দম্পতিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে জেএসএস সন্ত্রাসীরা

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালীই ইউনিয়নের সীতাপাহাড় এলাকার নিরীহ এক মারমা দম্পতিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার (১২ মে) সন্ধ্যা ৭টায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে জেএসএস’র একটি সশস্ত্র দল।
জেএসএস সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে গুরুতর আহত চিংঞো মারমা (৩৮) এবং তার স্বামী থোয়াইচাই মারমা বর্তমানে চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আহত দম্পতির ছেলে সুইহ্লা চিং মারমা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল অস্ত্র এবং লাঠি নিয়ে এসে আমাদের দোকানে বাবা এবং মা’ কে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে চলে যায়। সন্ত্রাসীরা সকলে সবুজ পোশাক পরিহিত ছিল বলে জানান সুইহ্লা চিং মারমা। পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা আহত দুই জনকে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাজীব শর্মা জানান, গুরুতর আহত থোয়াই চাই মারমার বুকের পাজরের হাড় ভাঙ্গছে এবং বাম হাতে ক্ষত রয়েছে। এইছাড়া তাঁর সহধর্মিণী কোমরে আঘাত পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে কর্তব্যরত ডা. জয় সেনের কাছে রোগীদের অবস্থা জানতে চাইলে তিনি পার্বত্যনিউজকে বলেন, ‘রাইখালী থেকে দুই জন রোগীকে সন্ধ্যার পর হাসপতালে আনা হয়েছে। তারা দু’জন স্বামী-স্ত্রী। স্ত্রী চিংঞো মারমার পিঠে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন আছে। অন্যদিকে উনার হাজবেন্ড থোয়াইচাই মারমার হাত থেকে রক্ত পড়ছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম, প্রচণ্ড আঘাতের কারণে হাতের হাড় হয়তো ভেঙে গেছে। কিন্তু এক্স-রে দেখা গেছে, হাতের হাড় ভাঙেনি, কিন্তু বুকের পাজরের একটি হাড় ভেঙ্গে গেছে। রোগীদের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তবে আগামীকাল সার্জনরা দেখে সিদ্ধান্ত দেবেন, তাদের এখানেই চিকিৎসা দেয়া হবে নাকি উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও রেফার করা হবে।’
রাইখালী ইউনিয়ন এর ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম জানান, আমাকে ঘটনাটি তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। তবে কারা মেরেছে সেই বিষয়ে অবগত নই।
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী পার্বত্যনিউজের কাপ্তাই প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনা শুনার পর চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেন নাই। অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান।

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা ছিল জেএসএস সন্ত্রাসী। জেএসএস’র স্থানীয় এই সন্ত্রাসী গ্রুপের কমান্ডার উক্যসিং মারমা বাবু (৩২), সে কাপ্তাইয়ের রাইখালী ইউনিয়নের ডলুপাড়ার মংসুইউ মারমার ছেলে।
এই উক্যসিং মারমা বাবুর নেতৃত্বে জেএসএস’র অন্তত ১৫ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল আজ সীতাপাহাড় এলাকায় ওই মারমা দম্পতির উপর নির্যাতন চালিয়েছিল। এ সময় উক্যসিং মারমার সাথে সশস্ত্র দলে আরো ছিলো, (১) উক্যসিং মারমা বাবু, (২) জনি মারমা, (৩) নিংথোয়াই মারমা, (৪) মেফা মারমা, (৫) থোয়াইসুইনুং মারমা, (৬) আলুমং মারমা (খইয়া) , (৭) লাবৃসাই মারমা ( লাবু), (৮) অমরলেন্দু তনচংগ্যা প্রমুখ।