কাপ্তাইয়ে মৌসুমী ফলে বাজার সয়লাব: পর্যটক না আসায় হতাশ বিক্রেতা

fec-image

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার উপজেলা বড়ইছড়ি সদরের ফল বিক্রেতা মো. দুলাল। টানা ১৫ বছর ধরে উপজেলায় ফলের ব্যবসা করেন । বিশেষ করে জৈষ্ঠ মাস অথাৎ মধুমাসে তার দম ফেলার সময় থাকেনা। আম, লিচু, কাঠাল, আনারস এইসব মৌসুমী ফল কেনার জন্য ক্রেতার উপচে পড়া ভীড় থাকে তার দোকানের সামনে। প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার ফল বিক্রি হতো তার। কাপ্তাইয়ের বাহির হতে প্রচুর পর্যটক এসে এইসব ফল নিয়ে যেতো বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্ত এইবার তার মুখে নেই হাসি। করোনা ভাইরাসের কারণে কমে গেছে বিক্রি। পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় পর্যটকের আনাগোনাও কম।

কাপ্তাই বড়ইছড়িতে মৌসুমী ফল বিক্রেতা মো. দুলাল সহ কথা হয় মো. মাসুদ, এনামুল হক বাচ্ছু (কৃষক), বেলাল, গৌরাঙ্গ সহ অনেকের সাথে। তারা সকলে জানালেন, এ বছর রুপালী, আম্রপালী, রাংঙ্গু এবং মল্লিকা জাতের আমের ফলন হয়েছে কাপ্তাইয়ে, তবে অন্য বছর থেকে এবছর কম হয়েছে আমের ফলন। এছাড়া আনারস, কাঠাল, লিচুসহ নানা মৌসুমী ফলে ভরপুর হয়ে আছে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন হাটবাজার। তবে গত বছরের তুলনায় দাম এই বছর একটু বেশি হওয়ায় তারা লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন।

তারা জানান, গত বছর যেখানে যেই আম কেজি প্রতি ২০-৫০ টাকা ছিল এবার তার দাম ৬০-৮০ টাকা। আবার যেইগুলোর দাম ৫০ টাকা ছিল এবার তা ৬০-৮০টাকায় বিক্রি করছেন তারা। করোনা ভাইরাসের প্রকোপে পর্যটক আসলে তারা আরও বেশি দাম নিয়ে বিক্রি করতে পারতো বলে মনে করছেন।

এদিকে কাপ্তাইয়ের তালুকদার সবুজ খামারের প্রোপাইটর ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুন তালুকদার জানান, প্রতি বছরের মতো এবছরও তার বাগানে প্রায় ২০ একর জমিতে আম্রপালি এবং রাঙ্গু জাতের আমের ফলন হয়েছে। তবে আম্রপালি জাতের আমের ফলন গত বছরের তুলনায় এই বছর একটু বেশি হলেও আকারে একটু ছোট। তিনি আরও জানান, রাঙ্গু জাতের আমের ফলন এই বছর তাঁর বাগানে কম হয়েছে, তবে করোনা ভাইরাসের প্রকৌপে বাহিরের পর্যটক না আসায় এইবছর আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।

কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামসুল আলম চৌধুরী জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে এই বছর কাপ্তাইয়ে মৌসুমী ফলের আশানুরূপ উৎপাদন হয়েছে। প্রত্যেকটি গাছে পোকা মাকড়ের আক্রমন ছাড়া কৃষকরা আম, কাঠাল, আনারস, লিচু সহ নানা ফলের উৎপাদন করেছেন। তবে স্থানীয় বাজারে বেচাবিক্রি থাকলেও করোনা ভাইরাসের কারণে পর্যটক কম আসায় এই বছর কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না বলে এই কৃষি কর্মকর্তা জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাপ্তাই, পর্যটক, বিক্রেতা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন