কাপ্তাই আপষ্ট্রিম জেটিঘাট সাপ্তাহিক হাটে পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলা

fec-image

রাঙ্গামাটি কাপ্তাই উপজেলার ৪ নম্বর ইউনিয়ন আপষ্ট্রিম জেটিঘাট সাপ্তাহিক প্রতি শনিবার হাটবারে পাহাড়ি-বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

প্রতি শনিবার এই হাটবারে কোটি টাকার ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। কাপ্তাইয়ের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র কাপ্তাই জেটিঘাটে। সপ্তাহের শনিবার ভোররাত থেকে হাট বসে। যেটি বিকাল পর্যন্ত চলমান থাকে। কাপ্তাই উপজেলা ছাড়াও বিলাইছড়ি হতে শত শত মাইল দুর থেকে উপজাতি সম্প্রদায়ের ক্রেতা-বিক্রেতারা এই সাপ্তাহিক হাটে ছুটে আসেন। আবার হাটের আগের দিন থেকে বহু ক্রেতা-বিক্রেতা কাপ্তাই চলে আসেন। কাপ্তাই উপজেলা ছাড়াও সদুর বিলাইছড়ি, জুড়াছড়ি, রাঙামাটির বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা নৌ-যোগে কাপ্তাই হ্রদের মাধ্যমে তরতাজা শাক-সবজি, ফলমূল সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে আসেন বিক্রের জন্য।

শনিবার কাপ্তাইয়ের সাপ্তাহিক হাটে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোররাত থেকেই আস্তে আস্তে ক্রেতা-বিক্রেতার আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে কাপ্তাই জেটিঘাট বাজার। ঠিক ভোরের আলো ফুটতেই হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে ভরপুর হয়ে যায় এই হাট। যেখানে দেখা যায়, পাহাড়ী এবং বাঙালী ক্রেতা-বিক্রেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয় এই সাপ্তাহিক হাট। হাটে হারেক প্রকারের শাক-সবজি, ফলমুল কলা ছাড়াও মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সবকিছুর দেখা মেলে। কিছু কিছু জায়গায় চোখে পড়ে পাহাড়ী ক্রেতারা বাঙালীদের কাছ থেকে জিনিসপত্র ক্রয় করছে আবার বাঙালী ক্রেতারা পাহাড়ী বিক্রেতাদের তাছে পণ্য ক্রয় করছে। এযেন পাহাড়ী বাঙালির সম্প্রীতির এক মেল বন্ধন। অন্যদিকে কাপ্তাই জেটিঘাটে সাপ্তাহিক হাটে অধিকাংশ পণ্যদ্রব্য আসে কাপ্তাই হ্রদে নৌ-যোগে। তাই দুর দুরান্ত থেকে আসা শতশত বোট বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ঘাটে ভিড়ে। সেখানে অধিকাংশ সময় মালামাল ক্রয় বিক্রয় হয়ে যায়। সেখানারকার পণ্যদ্রব্য গুলো পাইকার ক্রেতারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তরে নিয়ে বিক্রয় করে থাকে। পাশাপাশি কাপ্তাই সাপ্তাহিক হাটে ইজারার মাধ্যমে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে।এছাড়াও সাপ্তাহিক শনিবার প্রায় কোটি টাকার চেয়েও বেশি নিত্যপণ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয় করা হয়ে থাকে।

এদিকে সুদূর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে সবজি বিক্রেয় জন্য আসা জাহাঙ্গীর জানান, আমরা সকাল ভোরে আসি। এবং সব টাটকা শাক সবজি বিক্রয় করে রাতে বাড়ি চলে যাই। অনেক ব্যবসায়ী একদিন আগে চলে আসে। এখানে অনেক কম দামে একদম তরতাজা তরি তরকারি, ফলমুল পাওয়া যায়। যার ফলে দুরদুরান্ত ক্রেতারা এসে লাভবান হন। আর এই কাপ্তাই জেটিঘাট বাজারের পণ্যগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পাহাড়ে উৎপাদিত এসব ফসল শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।

কাপ্তাই জেটিঘাট সাপ্তাহিক হাটের ইজারাদার কতৃপক্ষ বলেন, প্রতি সপ্তাহে এখানে লক্ষ লক্ষ টাকার পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। কাপ্তাই উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী হাট বসে এখানে। যেখানে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। আর তাছাড়া পাহাড়ী-বাঙালী ক্রেতা বিক্রেতার এক মিলনমেলায় পরিণত হয় এই সাপ্তাহিক হাট। এখানে যেন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকে তাই সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়ে থাকে।
.

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন