parbattanews

কাপ্তাই ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন অটোমেটিক বেরিয়ার গেইট

কাপ্তাই ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী শক্তিতে মুগ্ধ রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক

কাপ্তাই নৌ বাহিনী স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র আজমাঈন ইশরাক, শাহরিয়ার রাহাত ও জাওয়াদ আল আহমদ এর উদ্ভাবনী অটোমেটিক বেরিয়ার গেইট এবং লেজার সিকিউরিটি সিস্টেম যন্ত্র দেখে মুগ্ধ রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। তাদের প্রথম উদ্ভাবনী অটোমেটিক বেরিয়ার গেইট এর সিস্টেম হলো, যখন রেল লাইন দিয়ে ট্রেন আসবে তখন অটোমেটিক ভাবে গেইট পরে যাবে এবং তখন রেল লাইনের উপর দিয়ে যাওয়া গাড়ি দাঁড়িয়ে রাখতে বাধ্য হবে চালকরা। যে মূহুর্তে চালকের অসাবধান বশত ব্রাক্ষনবাড়িয়ায় ট্রেন দূর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে ঠিক সেই মূহুর্তে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের এই আবিস্কার আশার সঞ্চার করে।

এই স্কুলের ৩ বন্ধুর আর একটি আবিস্কার লেজার সিকিউরিটি সিস্টেম। যা দিয়ে আকাঁবাকা সড়কে কোন গাড়ী আসলে বিপরীতমুখী গাড়ীগুলোকে বাতি জ্বালিয়ে একটা বার্তা দিবে যাতে চালকরা সাবধান হতে পারে।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ে উপজেলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর নতুন নতুন উদ্ভাবনী দেখে মুগ্ধ হন। এ সময় কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাদির আহমেদ, ৪ নং কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক, উপজেলা স্কাউটস এর সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হাসান বাবু, কাপ্তাই প্রেসক্লাব সভাপতি কবির হোসেন, সম্পাদক ঝুলন দত্তসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র তরিকুল ইসলাম এর সৃষ্ট যন্ত্র “পানির অপচয় রোধ” এবং ১০ম শ্রেণীর ছাত্র মো: আসাদুজ্জামান আকাশ এর নিজস্ব উদ্ভাবন “পানি ও পেট্রল দিয়ে গ্যাস তৈরী” আগত অতিথিদের প্রশংসা অর্জন করে।

চিৎমরম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র মো: সাজ্জাতুল ইসলামের উদ্ভাবনী “স্মার্ট ট্রাফিক” বর্তমান সময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন অতিথিরা।

উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত কাপ্তাই শহীদ সামসুদ্দীন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী তাসলিমা আক্তার এর আবিস্কার ” অকটেন, থিনা এবং ককসিট দিয়ে গাম তৈরী আর একই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী হাবিবা আক্তার এর পপকন ভাজার মেশিন তৈরী মনে করিয়ে দেয় এদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়েছে বহুদুর। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাপ্তাই শিশু নিকেতন স্কুলের ৩ শিক্ষার্থী সানোয়ার হোসেন, আফিয়া হুমাইরা এবং আব্দুল্লা আল সুফির নিজস্ব ভাবনা সোলার মডেল, ব্যারোমিটার ও অটোওয়েট ফ্রিজ তৈরির মডেল মনে করিয়ে তারা বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর যোগ্য উত্তরসুরী।

কাপ্তাই উপজেলার পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পানির প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং দেশের মানুষ তা থেকে বিদ্যুৎ এর চাহিদা মেটায়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোল ঘেঁষে অবস্থিত আল আমিন নুরিয়া মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার ছাত্র আবু বকর ছিদ্দিক এর উদ্ভাবনী ” বাতাসের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন” যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে উপকৃত হতে পারে দেশ ও জাতি।

এছাড়া এই মাদ্রাসার আর এক ছাত্র হোসাইন কিবরিয়ার উদ্ভাবন ” ওয়াটার ডিসপেনসার” এবং কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিদুজ্জামান খান এর মিনি এয়ারকুলার, তানভীর হাসান এর ঘাস কাটার যন্ত্র এবং ফজলে রাব্বির পাওয়ার ব্যাঙ্ক মেশিন এর উদ্ভাবনী শক্তিতে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ তাদের আলোকিত ভবিষ্যত প্রত্যাশা করেন।

এই বিজ্ঞান ক্লাবের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল জানান, আগামী প্রজন্মকে বিজ্ঞানমনস্ক জাতি হিসাবে গড়ে তোলার জন্য তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষার বিকল্প নাই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাদির আহমেদ জানান, এই ক্লাব গঠনে উপজেলার প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর শিক্ষকদের আন্তরিকতা ছিলো আর বিজ্ঞান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, আজকের ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা আগামীতে দেশ গড়ার কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করবে।

Exit mobile version