কাপ্তাই থেকে পাহাড়ি ঝুম কচু মুখি ছড়া যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় উৎপাদিত পাহাড়ি ঝুম কচু মুখি (কচু ছরা) এখন বস্তাভর্তি হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
শিলছড়ি, ওয়াগ্গা, ভেলোয়া পাড়া, হাজির টেক, নুনছড়ি, বড়ইছড়ি পাড়া, দৌলইন্যপাড়া, তম্বয়পাড়া, কুকিমাড়া ও মুরালীপাড়ার ঝুম চাষিরা কচু মুখি উত্তোলন করে তা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করছেন।
এ বছর কচু মুখির বাজারমূল্য ভালো থাকায় ব্যবসায়ীরা আগাম বায়না দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে কচু মুখি সংগ্রহ করছেন। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা পাহাড়ে এসে প্রতি মন কচু মুখি ১২-১৪ টাকা মূল্যে কিনছেন। তবে চট্টগ্রাম বা ঢাকায় এই কচু মুখি বিক্রি হচ্ছে ৪০০০-৪৫০০ টাকা পর্যন্ত।
কিছু ক্ষেত্রে কচু মুখি পরিষ্কার অবস্থায় বেশি দামে বিক্রয় হলেও অপরিষ্কার অবস্থায় কিছুটা কম দামে বেচাকেনা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
ভেলোয়া পাড়ার কৃষক সাইক্রু অং মারমা ও তার ভাই চিংপ্রু মারমা জানিয়েছেন, তারা বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছর পাহাড়ে কচু চাষ করেন। এ বছর দেড় একর জমিতে ৬০ মন কচু বীজ রোপণ করেছিলেন।
তাদের খরচ হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে অতিবৃষ্টি ও পাহাড় ধসের কারণে কচু ফসল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফসল বিক্রয় করে তারা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় করেছেন, ফলে প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তারা জানিয়েছেন, আগামী বছর চাষের জন্য ৪০-৫০ মন কচু মুখি বীজ সংরক্ষণ করে রেখেছেন।
কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ইমরান আহমেদ জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কাপ্তাইয়ে ৪১ হেক্টর জমিতে কচু চাষ হয়েছে, যার মোট উৎপাদন ১০৪৫ মেট্রিক টন। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪২ হেক্টর জমি ও প্রায় ১১০০ মেট্রিক টন উৎপাদন।
তিনি জানান, কিছু জায়গায় ক্ষতি হলেও অধিকাংশ এলাকায় কচু মুখি ভালো চাষ হয়েছে।
কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি ঝুম কচু মুখি দেশের বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হয়ে উঠেছে। তবে আবহাওয়া ও বাজার পরিস্থিতি কৃষকদের লাভ-ক্ষতির চিত্রকে প্রভাবিত করছে।