কাপ্তাই হ্রদে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ জলধারা রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ। এক সময় কাপ্তাই হ্রদকে মৎস্য প্রজাতির সমৃদ্ধশালী জলভাণ্ডার বলা হত। কিন্তু দীর্ঘদিন ড্রেজিংয়ের অভাবে, গভীরতা হ্রাস, পানি ও পরিবেশ দূষণের কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে হ্রদের বহু প্রজাতির মাছ। ফলে এবার বিকল্প পদ্ধতিতে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করর্পোরেশন, রাঙ্গামাটি।
সরেজমিনে গিয়ে কাপ্তাই হ্রদে দেখা যায়, ভাসমান খাঁচাগুলো রাঙ্গামাটি জেলার বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করর্পোরেশনের পিছনে কাপ্তাই হ্রদে স্থাপন করা হয়েছে। এই ৪টি খাঁচায় ড্রাম, বাঁশ, লোহার পাইপ ও চারদিকে জাল দিয়ে তৈরি করা হয় এই ভাসমান খাঁচা।
এই এগুলো তৈরি করতে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে রাঙ্গামাটি জেলার বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করর্পোরেশনের সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করর্পোরেশনের রাঙ্গামাটি জেলা ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার এম. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পরীক্ষামূলকভাবে ভাসমান খাঁচায় মাছের পোনা চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষের যদি ভাল ফলাফল হয়, তাহলে কাপ্তাই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী পহেলা মার্চ থেকে ৪টি ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হবে এবং এগুলোতে রুই, কাতলা, মৃগেল,পাবদা, নাইলোটিকা, পাঙ্গাসসহ মিশ্রভাবে মাছের পোনার চাষ করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধের কারণে সৃষ্ট দেশের এই বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদটিকে মৎস্য সম্পদের ভাণ্ডরে পরিণত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়। তারপর ১৯৬৪ সাল থেকে হ্রদ থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মৎস্য আহরণ শুরু হয়।
এরপর থেকেই পহেলা মে মাস থেকে কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণসহ কাপ্তাই হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে তিন মাসের জন্য হ্রদ হতে সকল প্রকার মৎস্য আহরণ, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন বিএফডিসি ও রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
এরপর ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।