কিশলয় স্কুলে রাতের অন্ধকারে পাচারকালে বই ভর্তি ট্রাক জব্ধ!

fec-image

রাতের অন্ধকারে স্কুল থেকে চুরি করে পাচারকালে পাঠ্যবই ভর্তি একটি ট্রাক জব্ধ করা হয়েছে। এ সময় আটক করা হয়েছে ট্রাক চালক, হেলপার ও ফেরিওয়ালাসহ ৪ জনকে। তারা সাতকানিয়া কেরানিহাটের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে স্কুলের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন স্কুলে সোমবার (৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার সময় ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বই চুরির ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন স্থানীয়রা।

বইসহ ট্রাক জদ্ধের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও খুটাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

সুত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে বেশ ক’জন লোক নিয়ে একটি ট্রাক গাড়ি স্কুলে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা স্কুলের বিভিন্ন সালের পাঠ্য বই বস্তা বন্দি করে ট্রাকে উত্তোলন করে। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে রাতেই চকরিয়া ইউএনওকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করা হয়।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান তাৎক্ষনিক স্কুল কমিটির সভাপতিকে বইসহ গাড়ি জদ্ধের নির্দেশ দেন। তারই নির্দেশে সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন রাত সাড়ে দশটার সময় স্কুলে এসে বই ভর্তি ট্রাক জদ্ধ করে। এ সময় পাচার কাজে জড়িত ট্রাক ড্রাইভার, হেলপার ও ফেরিওয়ালাসহ ৪ জনকে আটক করেন।

প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক ও কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য এ কাজে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তবে এ সময় তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ।

তারা জানান, প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে বই পাচার কাজে কিছু শিক্ষক ও কমিটির সদস্য জড়িত রয়েছে। তবে বই বিক্রির ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। এমনকি সভাপতি, প্রধান শিক্ষকও তাদের কিছুই বলেন নি বলে জানান।

জানতে চাইলে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন বলেন, ইউএনও স্যারের ফোন পেয়ে রাতেই স্কুলে এসে বই ভর্তি ট্রাক জদ্ধ করি এবং তাৎক্ষনিক প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। আপাতত বইসহ ট্রাক জদ্ধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসলে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, কমিটির সদস্যদের সম্মতি নিয়ে পুরাতন ছিড়া বই বিক্রির জন্য কমিটির একজন সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রাতে কেন পাচার করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

স্থানীয়রা জানায়, বিগত ৬ মাস পূর্বেও প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার বই খাতা বিক্রি করা হয়েছে। এসব অপকর্মে জড়িতদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান এলাকার সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ, কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন, পাঠ্যবই
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন