parbattanews

কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতিকে অপসারণের দাবিতে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মানববন্ধন 

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া জনৈক ছমি উদ্দিনকে সভাপতি পদ থেকে প্রত্যাহার এবং সভাপতি পদে হেলান উদ্দিনকে নিয়োগ প্রদানের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কুতুপালং এলাকার ছাত্র/অভিভাবক এবং সর্বস্তরের জনসাধারণ।

৮ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সকাল ১১টায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় সম্মুখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন, উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আমিন শাকিল, রাজাপালং ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান রাব্বি, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগ রাজাপালং ইউনিয়ন সভাপতি সাইফুল ইসলাম, যুবনেতা মো. আলী, মো. রুবেল, কুতুপালং পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক অপু বড়ুয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কুতুপালং ৯নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় ইউপি সদস্য মরহুম মৌলভী বখতিয়ার আহমদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ১৭ বছর ইউপি সদস্য হিসেবে জনসেবা করে গেছেন। তার মৃত্যুর পর ছেলে হেলাল উদ্দিন উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে পরাজিত করে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ইউপি সদস্য হিসেবে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ বছর সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন বক্তার মেম্বার। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের উখিয়া উপজেলা সভাপতি এবং রাজাপালং ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।তাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য হেলাল উদ্দিনকে সভাপতি পদে নিযুক্ত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ডের বরাবর সুপারিশ করেন৷

কিন্তু কিছু ষড়যন্ত্রকারী, যারা বিভিন্ন মিথ্যাচার করে স্কুলের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায়। বিশেষ করে কুতুপালং গ্রামের একজন ব্যক্তি, যিনি কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে ভরাডুবি হয়, তিনি সবসময়ই চায় এলাকার উন্নয়ন বঞ্চিত করতে। তারাই মূলত মরহুম বক্তার মেম্বারের পরিবারের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার কুতুপালং গ্রামে বিশাল উন্নয়ন করেছে। যা ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। যারা মিথ্যাচার করছেন তৎমধ্যে ছমি উদ্দিন নামক ব্যক্তিটি একজন মুখোশধারী ব্যক্তি, তিনি কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। তিনি অসংখ্য মানুষকে জামিনের কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তাছাড়া ওই ছমি উদ্দিন চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডারের শিবিরের নেতা নাছিরসহ অপরাপরদের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন নেওয়ার অভিযোগে সনদ বাতিল হয়েছিল। সে কুতুপালংয়ের ভোটার হলেও তার কোন অস্তিত্ব নেই এলাকায়। জনবিচ্ছিন্ন একজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত তিনি। কুতুপালংয়ে ১৫/১৬জন ব্যবসায়ির নিকট থেকে সেলামী বাবদ ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । এসব টাকা চাইতে গিয়ে অনেকেই মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, ছমি উদ্দিন দীর্ঘ ৬ মাস কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি থাকাকালীন স্কুলের কোন উন্নয়ন হয়নি, বরং রোহিঙ্গা ছাত্র ভর্তি এবং অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হিসেবে হেলাল উদ্দিন প্রতিবাদ করায় তাঁর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। মৌলবী বখতেয়ার বেঁচে থাকতে তার সাথে জমির বিরোধ ছিলো ছমি উদ্দিনের। তার দখলে থাকা জমিতে বর্তমানে হেলালদের জমি আছে। যার বিএস ৭৮৬২,৭৮৬৩ নং দাগ। এসব জমি চাইবে বলে সে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

হেলাল কিসের বায়তুল মাল সম্পাদক ছিল, এধরণের কোন প্রমাণ যদি দেখাতে পারেন, তাহলে শাস্তি মাথা পেতে নেবে হেলাল। আর মরহুম বখতিয়ারের বিরুদ্ধে যে নারী নির্যাতন মামলা হয়েছিল তা সম্পুর্ণ সাজানো। যার কারণে ওই মামলায় নির্দোষ প্রমানিত হয় সে। অথচ ওই মামলার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছিল ছমি উদ্দিন৷ মিথ্যা মামলার পেছনে হাত রয়েছে জনৈক এড. ছমি উদ্দিনের। তারা মৌলবী বখতেয়ারের মতো হেলালকেও মামলা, হামলায় জড়িয়ে হত্যা করে লাশ ঘুম করে ফেলবে মর্মে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। হেলাল একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। আশাকরি এ বিষয়ে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করবেন। পরিশেষে উক্ত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সভাপতি পদ হতে সরিয়ে দেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নিকট জোর দাবি জানান বক্তারা।

Exit mobile version