parbattanews

কুতুবদিয়ায় পানিতে ডুবে ৯ মাসে ২২ শিশুর মৃত্যু

কুতুবদিয়ায় শুধু পুকুর বা পানিতে ডুবে ৯ মাসে ২২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।যার গত সেপ্টেম্বর মাসেই মারা গেছে ৯ জন শিশু। এর মধ্যে গত শুক্রবার একদিনেই পানিতে ডুবে ঝরে গেল ৩টি শিশু। এ ভাবেই প্রতিনিয়িত পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে দ্বীপের অবহেলিত পরিবারের শিশুরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্র থেকে জানা যায়, গত একমাসেই পানিতে ডোবা ৭ শিশুকে আনা হয়। এদের সবাই স্পট ডেথ ছিল। এ ছাড়া পানিতে ডোবা আরো দু‘টি শিশু প্রানে বেঁচে যায়। এ মাসের প্রথম দিনেই (শুক্রবার) ৩ শিশুর মৃত্যু হয় পুকুরে ডুবে।

২৬ সেপ্টেম্ব উত্তর ধুরুং আকবরবলী পাড়ায় সামিয়া(২৮ মাস), ২৫ সেপ্টম্বের উত্তর কৈয়ারবিলের আরমান (৩), ১৪ সেপ্টেম্বর বড়ঘোপ বদাইয়া পাড়ার রাফি (১৮ মানস), ১৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ ধুরুং আলী আকবর সিকদার পাড়ার নাজিফা (২), ৯ সেপ্টেম্বর লেমশীখালী আফাজ উদ্দিন সিকদার পাড়ার মুস্তাফিজুর(৬)। এছাড়া উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে একই পরিবারে দুই শিশু পুকুরে ডুবে মারা গেলে হাসপাতালে না এনেই স্থানীয়ভাবে দাফন করে বলে ওই আত্মীয় সালমা জানান।

১৯ আগস্ট দক্ষিণ ধুরুং শাহনেওয়াজ(৭), ২৬ আগস্ট উত্তর ধুরুং বাঁকখালীর জুবাইর (৩০ মাস) , ২১ মে ফাহাদ ওরাহিম নামের ২ শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। গত জানুয়ারি মাসে সামিয়া (৪), তাসফি (১৭),ছাবিদা (১৮ মাস),আজিম (১৬ মাস) ও জারিফ (২) নামের ৫ শিশুর মৃত্যু হয় পানি ডুবির ফলে।

দক্ষিণ ধুরুং আলী আকবর সিকদার পাড়ার এনাম জানান, পিতা-মাতার অবহেলার কারণেই আমাদের সন্তানরা পানিতে ডুবে মরছে। তিনি ইউপি নির্বাচনে সদস্যপ্রার্থী ছিলেন। ভোট প্রচারণায় ব্যস্ত থাকায় তার দুই বছর বয়সী নাজিফাকে পানি ডুবিতে হারাতে হয়েছে।

দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, বেশিরভাগ পরিবারে অপরিকািল্পত পুকুর বা ডোবা খনন আর অভিভাবকদের সচেতনার অভাবেই পানি ডুবিতে শিশুর মৃত্যুর হার ক্রমেই বাড়ছে কুতুবদিয়ায়। এটি রোধে মা-বাবার সচেতনা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান ছৈয়দ কামরুল হাসান বলেন, উপজেলায় সর্বত্র বিশেষ করে উত্তরজোনের ৩ ইউনিয়নে পানি ডুবির ঘটনা বেশি।বিভিন্ন প্রোগ্রামে এটি তুলে ধররেলও কারো নজরে আসছেনা। ফলে জনসচেতনা না বাড়ায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বাড়ছেই।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল হাসান বলেন, পানি ডুবিতে আগত শিশুদের সিংহভাগই ১ থেকে ৫ বছরের নিচে। এসব শিশুরা মায়েদের বা অভিভাবকের তত্বাবধানে থাকার কথা। মা-বাবার অবহেলা আর সচেতনা না থাকায় একমৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বাড়ির পুকুরগুলোতে নিরাপত্তা ঘেরা বেড়া থাকা জরুরী।এ ছাড়া জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিশু বান্ধব বিভিন্ন সংগঠনের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।

Exit mobile version