কুমিল্লায় মূর্তির পায়ে কুরআন রাখার দায়ে অভিযুক্ত ইকবাল সন্দেহে কক্সবাজারে ১ জন আটক

fec-image
কুমিল্লায় মন্দিরে কোরআন অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেন (৩০) নামক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে আটকের পর রাতেই কুমিল্লা পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, ইকবাল হোসেনের মতো একজনকে সৈকত এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় আটক করা হয়েছে। তবে, পরিচয় এখনো নিশ্চিত নয়। কুমিল্লায় নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করা হবে। এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে জানাবেন।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখায় প্রধান সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেন কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দ্বিতীয় মুরাদপুর-লস্করপুকুর এলাকার নূর আহম্মদ আলমের ছেলে। নূর আলম পেশায় মাছ ব্যবসায়ী।
কুরআন অবমাননার ঘটনায় ইকবালের সহযোগী হিসেবে অন্তত চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লার পুলিশ।
ইকবালের মা আমেনা বেগম জানান, তার তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ইকবাল সবার বড়। তিনি জানান, ইকবাল ১৫ বছর বয়স থেকেই নেশা করা শুরু করে। ১০ বছর আগে সে জেলার বরুড়া উপজেলায় বিয়ে করে। ওই ঘরে তার এক ছেলে রয়েছে, পাঁচ বছর আগে ইকবালের বিয়েবিচ্ছেদ হয়।
তারপর ইকবাল চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়া বাজার এলাকার কাদৈর গ্রামে আরেকটি বিয়ে করেন। এ সংসারে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
আমেনা বেগম বলেন, ‘ইকবাল নেশা করে পরিবারের সদস্যদের উপর অত্যাচার করতো। বিভিন্ন সময় রাস্তাঘাটেও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াত।’
ইকবাল মাজারে মাজারে থাকতে ভালোবাসত জানিয়ে তার মা বলেন, ‘সে বিভিন্ন সময় আখাউড়া মাজারে যেত। কুমিল্লার বিভিন্ন মাজারেও তার যাতায়াত ছিল।’
গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়াদিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এরপরই দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়।
পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা–ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুই জন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা ইকবালকে চিহ্নিত করে।
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন