কোনো বাধাই আটকাতে পারেনি নিচুংমা মারমা ও ফাহিমের প্রেম-বিয়ে


রাঙামাটি জেলার কাউখালীতে একটি প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে মামলা, হামলা ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েও শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি পার্বত্যাঞ্চলের সশস্ত্র চরমপন্থী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
অবশেষে ২৩ বছর বয়সী নিচুংমা মারমা তার প্রেমিক বাঙালি তরুণ ফাহিমকে রাঙামাটি কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করলেন। শুধু বিয়েই নয়, নিচুংমা মারমা স্বেচ্ছায় বৌদ্ধ ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হলেন এবং নতুন নাম রাখলেন ফাইজা।
জানা যায়, নিচুংমা মারমাদের বাড়ি কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের বড়ডুলুপাড়া এলাকায়। তার পিতার নাম রিপ্রুসাই মারমা। একই উপজেলার পোয়াপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন মেম্বারের ছেলে মো. ফাহিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে নিচুংমা মারমার। আর এই প্রেমই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁর জীবনে। তবে কোনো বাধায়ই আটকাতে পারেনি নিচুংমা মারমা ও ফাহিমের বিয়ে।
জানা যায়, তাদের প্রেমের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ইউপিডিএফ (প্রসিত) কর্তৃক মেয়েকে এবং মেয়ের পরিবারকে বাঙালি ছেলের সাথে প্রেম করার কারণে মারধর ও হুমকি প্রদান করে এবং নিচুংমাকে দিয়ে তার প্রেমিক ফাহিমকে আসামী করে কাউখালী থানায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করানো হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইউপিডিএফ (প্রসিত) কর্তৃক নিচুংমা মারমা ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মারধর করে ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ফাহিম সহ আরো একজন পাহাড়ি ছেলে রিমন চাকমাকে আসামী করে কাউখালী থানায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করান। মামলা নং ০৩/১৮, ধারা ৯(১)/৩০/০৭ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সহ ১৮৬০ সালের পেনাল কোর্ড আইনের ধারা ৫০৬/৩২৩/৩২৫/৩৪৪।
এই মামলায় ২৩ এপ্রিল ২০২৫ চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানার কদমরসূল এলাকা থেকে ফাহিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাউখালী থানার পুলিশ গ্রেপ্তার ফাহিমকে ২৪ এপ্রিল রাঙ্গামাটি কোর্টে প্রেরণ করেন। ২৫ মে ২০২৫ ফাহিম হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে জেল থেকে মুক্তি পান।
অবশেষে ১৫ জুন ২০২৫ রাঙামাটি কোর্টে ফাহিম ও নিচুংমা মারমার বিয়ের মধ্য দিয়ে ইউপিডিএফর সকল অপকৌশল ব্যর্থ হয় বলে জানা যায়। কোনো বাধাই আটকাতে পারেনি নিচুংমা মারমা ও ফাহিমের প্রেম-বিয়ে। তবে অভিযোগ রয়েছে যে, ইউপিডিএফ (প্রসীত) কর্তৃক নিচুংমার পরিবারকে দিয়ে ধর্ষণ ইস্যু তৈরির পেছনে বাঙালিদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কোর্টের মাধ্যমে এই দম্পত্তির বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি এখন কাউখালীবাসীর কাছে স্পস্ট প্রতীয়মান।
ছবি : প্রতীকি