কোরআন অবমাননা, পাকিস্তানের আহবানে বিশেষ বৈঠকে জাতিসংঘ

fec-image

সুইডেনে পবিত্র কোরআন অবমাননা নিয়ে জাতিসংঘে বিশেষ বৈঠক শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চে এই বিষয়ে বিশেষ ওই বৈঠক শুরু হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চে এই বিষয়ে বিশেষ ওই বৈঠক শুরু হয়।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) থেকে সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে-এর একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত উঠে এসেছে।

সম্প্রতি সুইডেনে একটি মসজিদের সামনে কোরআন পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে একদল আন্দোলনকারী। অভিযোগ আছে, সুইডেনের প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ওই ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে রীতিমতো ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানসহ মুসলিম বিশ্বের একাধিক দেশ ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। নিন্দনীয় এই ঘটনায় উত্তাল মুসলিম বিশ্ব।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জারদারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতিসংঘের এই বৈঠকে যোগ দেন। তিনি বলেন, ”এই ধরনের ঘটনা ইসলামোফোবিয়া, হেট স্পিচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মানুষে মানুষে ব্যবধান আরও বাড়ছে। সহিংসতা উসকে দেওয়া হচ্ছে।”

বৈঠকে মুসলিম নেতারা বলেন, কোরআন মুসলমানদের কাছে একটি আবেগের বিষয়। কোরআন পোড়ানো মুসলিমদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে। ফলে এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

বৈঠকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠন ইউএনএইচসিআরের প্রধান ভলকার টার্ক বলেন, ”মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, ইসলামোফোবিয়া, ইহুদিবিদ্বেষ, খ্রিস্টানদের নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। একইভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন-আহামেদি, ইয়াজেদি, বাহাইদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ অন্যায়। এই সবকিছুই অন্যায় এবং বন্ধ করা প্রয়োজন।”

আলোচনা, শিক্ষা এবং ধর্মীয় আদানপ্রদানের মাধ্যমে হেটস্পিচ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন টার্ক। এর জন্য সমস্ত দেশকে এগিয়ে আসতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, কোরআন জ্বালানোর ঘটনা সার্বিকভাবে বিদ্বেষ তৈরি করেছে, সহিংসতার জন্ম দিয়েছে এবং মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। এসব বন্ধ হওয়া দরকার।

সুইডেনের দক্ষিণপন্থি সরকারও মনে করে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা অনভিপ্রেত। কিন্তু তাদের বক্তব্য, সংবিধান সবাইকে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার দিয়েছে। কোরআন পুড়িয়ে যারা বিক্ষোভ করেছেন, তাদেরও সাংবিধানিক অধিকার আছে। সে কারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়নি। তবে মুসলিম বিশ্বের দাবি, এই ঘটনা মুসলিম সমাজের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। একেও এক ধরনের ইসলামোফোবিয়া বলা যেতে পারে। এ নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর মঞ্চেও আলোচনা হয়েছে।

টার্কও মনে করেন, কোরআন পোড়ানোর ঘটনা কেবলমাত্র ব্যক্তি অধিকার নয়। ব্যক্তির অধিকার কতদূর পর্যন্ত মেনে নেওয়া হবে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।

মুসলিম বিশ্বের চাওয়া, কোরআন পোড়ানো নিয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হোক।

আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই বৈঠক চলবে। অন্য দেশগুলোও সেখানে তাদের বক্তব্য জানাবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কোরআন, জাতিসংঘ, পাকিস্তান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন