parbattanews

কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

বাংলাদেশ -মিয়ানমার সীমান্তে চোরাই পথে গরু এনে দেশে কুরবানির গরুর হাট দখলের চেষ্টা করছে চোরাকারবারিরা। এতে দুশ্চিন্তায় খামারি ও গরু মালিক।

চোরাকারবারি রোধ করতে সীমান্তরক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নানাভাবে অভিযান জোরদার করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ দিনে পৃথক অভিযান চালিয়ে সীমান্তের নানা পয়েন্ট থেকে ৪ দফায় ১০০টি চোরাই গরু জব্দ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপরও থামছেনা চোরাকারবারিরা। চোরাকারবারিরা মরিয়া হয়ে বাংলাদেশের কুরবানির গরুর হাট দখলের চোষ্টায় আছে। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তে সাড়ে ৩ লাখ গরু নিয়ে বিপাকে ২ হাজার খামার মালিক ও অর্ধলাখ সাধারণ কৃষক।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ছৈয়দ নূর বলেন, বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাণী সম্পদ অফিসের তালিকায় ২শ ২৭টি পশু খামারি রয়েছে । এখানে পশু রয়েছে প্রায় ৬ হাজারের অধিক।

রামু প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্র জানান, রামুতে প্রায় ৯শ খামার আছে। যেখানে পশু রয়েছে প্রায় দেড় লাখ। আর কৃষকদের রয়েছে আরো পৌনে ১ লাখ পশু।

সূত্র আরও জানান, আলীকদমে রয়েছে প্রায় ২শ খামারির ১০ হাজার পশু। আর উখিয়া উপজেলায় ৫শ খামারির ১ লাখ পালিত পশু । সব মিলে সোয়া ৩ লাখ গরু সীমান্তের ৪ উপজেলায় খামারি ও কৃষকের কাছে প্রস্তুত আছে। যা এ উপজেলা সমূহের স্থানীয় কুরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্যে মোটাজাত করেছেন তারা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের গরু খামারি মালিক জাহাঙ্গির আলম বলেন, তারা খুবই শঙ্কিত যে, বার্মাইয়া গরু বাংলাদেশি বাজার দখলে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে বার্মাইয়া আসতে শুরু করেছে অনেক হাটে।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এ খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। তার খামারে গরু আছে ৩২টি। খামারে থাকা গরুগুলো যদি ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে না পারি, তাহলে ঋণ পরিশোধ করতে পারবো না। ঘর থেকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তাই অবৈধভাবে আসা বার্মাইয়া গরু পাচার জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ চান তিনি।

রামু উপজেলার কচ্ছপিয়ার খামারি রশিদ কেম্পানী বলেন, কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তার খামার গড়ে তুলেছেন। গর্জনিয়া কৃষি ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের কাছে তিনি দায়বদ্ধ। তার মোটাতাজাকরা গরু যদি উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতে না পারেন তাহলে তিনি বড়ধরনের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বেন।

তিনি বলেন, তারা এখন বিপাকে। কেননা বার্মাইয়া গরু এখন চোরাই পথে আসতে শুরু করেছে। জমজমাট সীমান্তের হাট-বাজার। বার্মাইয়া গরু যেহেতু সরকারের রাজস্ব ফাঁকির গরু সেহেতু এ গরু কমদামে বিক্রি করতে পারে সীমান্ত চোরাকারবারিরা। সুতারাং সব মিলিয়ে অবৈধভাবে আসা বার্মাইয়া গরু পাচার বন্ধের বিজিবিসহ সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও রামু প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, পশু খামারিকে বাচাঁতে কুরবানির এ সময়ে মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে পশু আসা বন্ধ না রাখলে দেশে অনেক ক্ষতি হবে। একদিকে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে, পক্ষান্তরে খামারিরা বড় অঙ্কের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে। পশু লালন প্রক্রিয়া প্রকল্পে স্থবিরতা আসবে।

Exit mobile version