বান্দরবান সরকারি কলেজ

কয়েক দফা বাড়িয়েও শেষ হয়নি ছাত্রী হোস্টেল ভবনের কাজ

fec-image

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে একমাত্র সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বান্দরবান সরকারি কলেজের ছাত্রী হোস্টেল ভবন নির্মাণের কাজ। এ কলেজের নির্মাণ কাজ কচ্ছপের ধীরগতিকেও যেন হার মানিয়েছে। ২০১৯ সালে শুরু হওয়ার কাজ কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ালেও চার বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। ফলে আবাসন সঙ্কটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দূররদূরান্ত থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হয়েছে অসন্তোষ আর ক্ষোভ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই দায়ী করছেন কর্তৃপক্ষরা।

শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর তথ্যমতে, ২০১৯ সালে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যায়ে ১৩২ শয্যার ছাত্রী পাঁচতলা বিশিষ্ট অবকাঠামো হোস্টেলটি নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েছিলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ আর এম ইঞ্জিনিয়ার্স নামে একটি ঠিকাদার। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ভবনের কাজ শেষ করতে না পারায় ৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাড়ানো হয় আরো দুই দফা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত শেষ হয়নি দরজা, জানালা, টাইলসসহ ভবনের সাজসজ্জার কাজ। যার ফলে আবাসন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলছে নাহ দূর-দূরান্ত থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দুর্গম এলাকায় থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দ্ররিদ্রতার কারণে পড়ালেখা ও অল্প খরচের একমাত্র ভরসা বান্দরবান সরকারি কলেজ। নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীরা আর্থিক অস্বচ্ছতার কারণে বেশির ভাগই এই কলেজের পড়ালেখা করছেন। তাছাড়া জেলার একমাত্র সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বান্দরবান সরকারি কলেজ। দূর-দূরান্ত থেকে পড়তে আসা নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের থাকা-পড়া একমাত্র প্রয়োজন পড়ে হোস্টেলটি। শুধু তাই নয় আবাসন সঙ্কটের কারণে অনেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিয়মিত ক্লাস করা থেকেও। অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা বাসা ভাড়া নিয়ে পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যেতে না পেরে কিছু শিক্ষার্থী মাঝপথে ঝরে পড়ছে। তাই দ্রুত হোস্টেল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি শিক্ষার্থীদের।

এব্যাপারে এ আর এম ইঞ্জিনিয়ার্স প্রতিষ্ঠানে স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মোস্তাক জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণের ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণে বিলম্ব এবং উপকরণের দাম বাড়ার ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেননি বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবান সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বিভিন্ন বর্ষের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ হাজারেও বেশি। বিভিন্ন উপজেলাসহ বাহির থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষাগ্রহণে ছুটে আসেন সরকারি এই কলেজে। কিন্তু আবাসন সুবিধা না থাকায় ও যাতায়াত ব্যয় বহন করতে না পারায় অনেকেই মাঝপথে ঝরে পড়ছে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে। তাছাড়া প্রত্যান্তঞ্চলে থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় নির্ভর করেন আবাসনের উপর।

বান্দরবান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ দূরদূরান্ত থেকে এসে ভর্তি হয়েছে। তাদের আর্থিক অবস্থাও তেমন ভালো না হওয়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারতেছেনা। তিনি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই একদিন বাড়ি থেকে এসে ক্লাস করছে। যার কারণে পরীক্ষার ফলাফলও তেমন ভালো হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানে হোস্টেলটি নির্মিত হলে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পথ আরো সুগম ও ভালো হবে বলে মনে করেন এই শিক্ষক।

বান্দরবান শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বরাদ্দ সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হোস্টেল নির্মাণ কাজটি সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে হোস্টেল নির্মান কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রী হোস্টেল, বান্দরবান সরকারি কলেজ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন