খাগড়াছড়িতে বিদায়ী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

fec-image

একটি বিদায় মানেই সবকিছুর ইতি নয়—বরং নতুন শুরু, নতুন স্বপ্নের পাখা মেলবার প্রস্তুতি। ঠিক এমন আবেগমাখা, স্বপ্নবোনা এক দুপুরে খাগড়াছড়ির আলুটিলা অ্যাম্ফিথিয়ারে অনুষ্ঠিত হলো ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।

শনিবার (১৪ জুন) খাগড়াছড়ি সদরের অন্যতম মনোরম পর্যটন এলাকা আলুটিলা অ্যাম্ফিথিয়ারে এক ভিন্নমাত্রার শিক্ষা-সাংস্কৃতিক মিলনমেলার আয়োজন করে আইসিটি পয়েন্ট ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত ১০ জন শিক্ষার্থী ও ২০০জন ২০২৫সালে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ম মাফিক বিদায় জানানো হয়।

সাবলীল আয়োজন, প্রাণবন্ত পরিবেশ, এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মুখরিত এই অনুষ্ঠান যেন হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের জীবনের এক স্মরণীয় দিন।

দেশের বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা জানানো হয় ফুল, ক্রেস্ট এবং গভীর শ্রদ্ধার মাধ্যমে। কৃতীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রিপায়ন ত্রিপুরা, নিরব দে এবং দিখনজয় ত্রিপুরা।

তাঁদের চোখে-মুখে ছিল গর্ব, আত্মবিশ্বাস এবং ভবিষ্যতের পথচলায় নতুন দিগন্ত ছোঁয়ার অদম্য ইচ্ছা। রিপায়ন ত্রিপুরা বলেন,”এই অর্জন শুধু আমার নয়, আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং পরিবার—সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।”

বিদায়ী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মাহফুজা আক্তার সীমা। তাঁর কণ্ঠে ছিল আবেগ আর আত্মপ্রত্যয়ের সমন্বয়। তিনি বলেন, “বিদায় মানে বিচ্ছেদ নয়, বরং এক অনন্য অভিযাত্রা। আজকের এই বিদায় আসলে আগামীকালকে আরও দৃঢ়ভাবে বরণ করে নেওয়ার সংকল্প।”

অনুষ্ঠান শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নৃত্য, গান, কবিতা আবৃত্তি আর দলীয় পরিবেশনায় মাতোয়ারা হয়ে ওঠে পুরো অ্যাম্ফিথিয়ার। খাগড়াছড়ির পাহাড়ি সংস্কৃতি ও বাংলা গানের অপূর্ব মিশ্রণে তৈরি হয় এক আবেগঘন আবহ।

অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সভাপতিত্ব করেন আইসিটি পয়েন্টের পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। আলুটিলার সবুজে ঘেরা অ্যাম্ফিথিয়ারে বসে এক অনন্য পরিবেশে তরুণদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় শিক্ষা, স্বপ্ন ও সাহসের বার্তা।

এই আয়োজন প্রমাণ করে—খাগড়াছড়ির মতো পার্বত্য জেলার শিক্ষার্থীরাও তাদের মেধা, মনন ও সাংস্কৃতিক প্রতিভায় পিছিয়ে নেই। বিদায়ী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হয়ে উঠবে প্রেরণার বাতিঘর।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন