খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় কয়লার সন্ধান

এ যেন কয়লার পাহাড়। মাটি খুঁড়লেই মিলছে কয়লা। ইতোমধ্যে এ কয়লা সংগ্রহ জ্বালানি কাজে ব্যবহার করছেন এলাকাবাসী। আর এমন কয়লার সন্ধান মিলেছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বামা গোমতীতে। এলাকাবাসীর দাবি ইতোমধ্যে তারা কয়লা সংগ্রহ করে নিজেদের জ্বালানির কাজে ব্যবহার করছেন । তাদের দাবি সত্য হলে পাহাড়ের দুর্গম জনপদে সম্ভাব্য কয়লা পাওয়ার গুঞ্জন সত্যি হলে তা হয়ে উঠতে পারে জাতীয় অর্থনীতির বিশাল সম্ভাবনার অন্যতম ক্ষেত্র। অবশ্যই ইতোমধ্যে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের একটি অনুসন্ধান টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। কয়লা সদৃশ এ বস্তু দেখতে প্রদিতদিন শতশত উৎসুক জনতা ভীড় করছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ‘কয়লার খনির খবর সত্যি হলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি যেমন আর্থিক উন্নতি ঘটবে তেমনি পাহাড়ের অর্থনীতিতেও যোগ করবে নতুন মাত্রা।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ৫ কিলোমিটারেরও বেশি পাহাড়ি পথ আর ঝিরি পেরিয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম এলাকা বামা গোমতী। এটি খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাথ পাড়ি দিয়ে মাটিরাঙা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের একটি দুর্গম পাহাড়ি জনপথ। আমতলী পৌছার পর যেতে হবে মোটরসাইকেল ও ঘণ্টাখানেক পায়ে হেঁটে পাহাড়ি উঁচুনিচু পথ পেরিয়ে।

জানা গেছে, এক বছর আগে জুমের পাহাড়ে হলুদ রোপণ করতে গিয়ে মাটি খুঁড়ে প্রথম কয়লা সদৃশ বস্তুর সন্ধান পায় স্থানীয় একজন কৃষক। সেই কয়লা বাড়িতে নিয়ে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেন তিনি এবং তাতে সফলও হন।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ধীরে ধীরে পাড়া প্রতিবেশীরাও মাটি খুঁড়ে কয়লা উত্তোলন করে ব্যবহার করছেন জ্বালানির কাজে। কিন্তু বছর খানেক ধরে মাটি খুঁড়ে এ কয়লা সংগ্রহ করে ব্যবহার করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা জানাজানি হয়। যার কারণে ইতোমধ্যে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের একটি অনুসন্ধান টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রঞ্জন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, এলাকার লোকজন পাহাড় খুঁড়ে কয়লা সংগ্রহ করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। এখানে আসলেই কয়লার খনি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা উচিত। তাই সরকারিভাবে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

মাটিরাঙ্গার আমতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল গণি বলেন, বেশ কয়েকটি জায়গায় কয়লার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মাটির নিচে কয়লা কোত্থেকে এলো বা কয়লার খনি আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। কয়লার খনি হলে দেশে কয়লার ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, কয়লা সদৃশ এক ধরনের খনিজ পদার্থ পাওয়া গেছে। যা স্থানীয়রা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সরেজমিন গিয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছি। প্রতিবেদন দেওয়ার পর আমরা পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবো।

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন