parbattanews

খাগড়াছড়িতে বন্যা ও পাহাড় ধস; পানিবন্ধি মানুষ, সেনা ও জেলা প্রশাসনের খাবার বিতরণ

আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করছে সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা

অতি বর্ষণে খাগড়াছড়িতে বন্যা ও পাহাড় ধসে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে রয়েছে হাজারো পরিবার। সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি ও দীঘিনালায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৩০ গ্রামের ২০ হাজার পরিবারের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। ১৭টি আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত তিন হাজার মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করছে সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা। বন্যার পাশাপাশি ব্যাপক পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলার দীঘিনালার উল্টাছড়ি পাহাড় ধসে যুগেন্দ্র চাকমা নামে একজনের মৃত্যু হয়। খাগড়াছড়ি পৌর শহরের শালবাগান এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী অর্ধ শতাধিক পরিবারকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আশ্রয় শিবিরে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে টানা বর্ষণে মহালছড়িতে সড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওযায় খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও দীঘিনালার সাথে রাঙামাটির লংগদু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পাহাড় ধসের কারনে বিভিন্ন সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধস ও বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরও ৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র।  বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির পাশাপাশি ব্যাপক পাহাড় ধসের শংকায় হাজারো পরিবার দিন কাটাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রাথমিকভাবে দুইশ মেট্রিক টন চাল ও দুই লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এদিকে আর্তমানবতার সেবার অংশ হিসেবে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় আটকা পড়া পাহাড়ীদের উদ্ধার করে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি সদর জোন।

মঙ্গলবার রাতে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার উত্তর গঞ্জপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উপস্থিত ৫৫০ জন পানিবন্দীদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেন খাগড়াছড়ি সদর জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মোঃ রেজাউল করিম।

এ সময় তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি সদর জোন (২২ বীর) তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় আর্তমানবতার সেবায় বেসামরিক প্রশাসনকে দুর্যোগপুর্ণ মুহুর্তে তাৎক্ষণিক সহায়তায় সার্বক্ষণিক পাশে ছিলো এবং আগামীতেও থাকবে। শান্তি-সম্প্রীতি এবং উন্নয়ন এই মুলমন্ত্রকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন যাবৎ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি সার্বিক মান উন্নয়নে ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেনাবাহিনীর ভুমিকা অনস্বীকার্য।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ আরাফাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পাহাড়বাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সকল সম্প্রদায়ের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Exit mobile version