parbattanews

খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উপর ভুতূড়ে বিলের খড়গ!

করোনা মহামারীতে খাগড়াছড়িতে কর্মহীন প্রান্তিক মানুষের উপর ভুতূড়ে বিলের খড়গ! মনগড়াভাবে বিল আদায়ে খাগড়াছড়ির হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও স্বীকার করছেন,‘করোনা’র কারণে প্রায় ৩ মাস বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডাং নেয়া সম্ভব হয়নি। তাই অনুমান নির্ভর বিল করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে সমন্বয় করছি।

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ও লক্ষীছড়িতে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার গ্রাহক প্রতিনিয়ত ভুতূড়ে বিলে অতিষ্ঠ । একই চিত্র জেলার সব ক’টি উপজেলায়।

বিষয়টি বিদ্যুৎ অফিসে জানানোর পরও প্রতিকার পাচ্ছে না গ্রাহকরা। বরং ব্যবহারের চেয়ছে বেশি রিডিং দেখানো হচ্ছে। বাড়তি বিল পরিশোধ বাধ্যতামূলক ও মিটার পরিবর্তন করতে বাধ্য করা`সহ নানা হয়রানির অভিযোগ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের।

মানিকছড়ি বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়,‘ মানিকছড়ি আবাসিক বিদ্যুৎ অফিসের অধীনে মানিকছড়ি ও লক্ষীছড়িতে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। এর মধ্যে মানিকছড়িতেই গ্রাহক সংখ্যা ৬ হাজার। লক্ষীছড়ি উপজেলায় গ্রাহক সংখ্যা ৭`শ।’

গ্রাহকদের অভিযোগ,করোনার কারণে নিয়মিত মিটার রিডিং না দেখে বিল দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত বিলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

এ নিয়ে অভিযোগ করলে গ্রাহককে মিটার পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয়। ব্যবহারের চেয়ে ১ থেকে ২ হাজার ইউনিট ব্যবহারের বাড়তি বিল চাপিয়ে দেয়া হয়েছে গ্রাহকদের উপর। এই নিয়ে অতিষ্ঠ গ্রহকরার।

গত দুই সপ্তাহে বাড়তি বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেছে। বিষয়টি সমাধান না করে বিদ্যুৎ অফিস বলছে ‘আপাতত বিল পরিশোধ করুন, পরে মাসে মাসে তা সমন্বয় করা হবে। বিদ্যুৎ অফিসের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন সিন্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছে সাধারণ গ্রাহকরা।

মানিকছড়ি বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো.নাজমুল হাসান জানান, ‘আমার মিটারের উঠেছে ৩১‘শ ৩৭ ইউনিট অথচ বিল করা হয়েছে ৫ হাজার ৩৯ ইউনিট। দোকানের বিলেও ২৫০ ইউনিট বেশি রিডিং দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিদ্যুৎ অফিসেও অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি।

মানিকছছড়ির পূর্ব তিনটহরীর মো. শাহ আলম খা অভিযোগ করে বলেন, করোনার মহামারীতেও আমাদের উপর বাড়তি বিলের খড়গ। আমার মিটারে উঠেছে ৪ হাজার ৮‘শ ৩৩ ইউনিট। অথচ বিলে দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ৪শ ৬৫ ইউনিট!

মানিকছড়ির বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপি রুপেন পাল জানান ,‘ বৈশ্বিক মহামারী ‘করোনা’ প্রাদুর্ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধের উপক্রম। বাজরে দোকান খোলা থাকে সর্বোচ্চ ৫/৬ ঘণ্টা। কিন্তু বিল করা হচ্ছে আগের চেয়ে ৩/৪ গুণ। বাজারের শতশত ব্যসায়ীর ভুতূড়ে বিদ্যুৎ বিলের খড়গ।

বাড়তি বিল নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ স্বীকার করে মানিকছড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন জানান, ‘করোনা’র কারণে প্রায় ৩ মাস বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডাং নেয়া সম্ভব হয়নি। অনুমান নির্ভর বিল করায় অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছে।

বিষয়টি আমরা গুরত্ব দিয়ে দেখছি। কোন গ্রাহককে যাতে বাড়তি বিল দিতে না হয় আমরা বিষয়টি সমন্বয় করছি। এমনকি এলাকায় এলাকায় মাইকিং করছি যাতে অভিযোগ থাকলে তা বিদ্যুৎ অফিসে এসে জানানোর জন্য। গ্রাহকদের সাথে কথা বলে বিল সমন্বয় করা হবে।’

একই অভিযোগ খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আওতাধীন সব গ্রাহকেরই।

Exit mobile version