খাগড়াছড়িতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিসহ নানা আয়োজনে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ওরফে ওরফে মঞ্জু (এমএন লারমার) ৩৭তম
মৃত্যুবার্ষিকী।

মঙ্গলবার (১০নভেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গী স্কোয়ার এলাকায় স্থাপিত এমএন লারমার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন দলীয় নেতাকর্মীরা ও সমর্থকরা।

এছাড়া দীঘিনালা উপজেলায় এমএন লারমার স্মরণে শোক র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা গ্রুপ। জেএসএস এমএন লারমার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নরেশ চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সভাপতি প্রীতি খীসা ও দীঘিনালা কার্বারী
এসোসিয়েশনের সভাপতি হেমব্রত চাকমা অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, পাহাড়ের জুম্ম জাতির অধিকার আদায়ে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা আমৃত্যু আন্দোলন করে গিয়েছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে ঘাতকরা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে হত্যা করলেও তার আদর্শকে ম্লান করতে পারেনি। জুম্ম জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান বক্তারা।

সন্ধ্যায় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাসহ আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শহীদদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উড়ানো হবে।

উল্লেখ, ১৯৮৩ সালের এই দিনে খাগড়াছড়ি জেলার ভগবান টিলা এলাকায় আভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে আট সহযোদ্ধাসহ নিহত হন মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ওরফে মঞ্জু(এমএন লারমা)। সে থেকে প্রতি বছর দিনটি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ওরফে মঞ্জু (এমএন লারমা)ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নির্বাচিত প্রথম সংসদ সদস্য। তিনি জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের সংবিধানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে জাতীয় সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন। এরপর থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ তাঁর নেতৃত্বে রাঙ্গামাটিতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।

পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির ইটছড়িতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন ‘শান্তি বাহিনী’। এমএন লারমার মৃত্যুর পর তারই ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে সন্তু লামরা সংগঠনের দায়িত্ব নেন।

সন্তু লারমার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর ও অস্ত্র সমর্পনের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন ‘শান্তি বাহিনী’ ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, মৃত্যুবার্ষিকী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন