খাগড়াছড়িতে ৬দিন থেকে বিদ্যুৎ নেই, প্রয়োজন গ্রীড-সাব ষ্টেশন
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম, খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে বিদ্যুত নেই ৬দিন থেকে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, তীব্র পানির সংকট,ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা বন্ধসহ অফিস আদালতের কার্যক্রমেও চরম বিঘ্ন ঘটছে। দিঘীনালায় টানা ৬দিনেও বিদ্যুত না থাকায় অনেকের মোবাইল ফোনও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে পাহাড়ী অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন জীবনে চরম দূর্ভোগ বেড়েই চলছে।
এদিকে, একটু ঝড় ও জোরে বাতাস হলেই খাগড়াছড়িতে বিদ্যুত বিভাগের “লাইন ফল্ট” হয়ে যায়। একবার লাইন ফল্ট হলে দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায় লাইন ঠিক করতে। মাঝে মাঝে কোথায় ফল্ট হয়েছে তা নির্ণয় করতেও পারে না জেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। এভাবে প্রায় দিনই অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে এ জেলার আটটি উপজেলার হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। নিয়মিত লোডশেডিংএর কারণে ক্রমেই ফুঁসে উঠছে খাগড়াছড়িবাসী।
খাগড়াছড়ি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমত আরা বেগম জানান, প্রায় এক সস্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের কম্পিউটার ক্লাস হচ্ছেনা। অনেক দূর থেকে ক্লাসে এসে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্লাস না করেই আবার বাসায় ফিরে যাই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ জেলায় প্রতিদিন ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিতরনের কথা থাকলেও সেখানে রয়েছে মাত্র ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এখানের স্থানীয় চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকলেও আবার এর মধ্যে রাঙ্গামাটির মারিশ্যা, বাঘাইহাট, লংগদ, ও নানিয়ারচর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। যার ফলে সর্বদা লোডশেডিং লেগেই থাকে ।
খাগড়াছড়ি বিদ্যূত বিভাগীয় অফিস-সহ পাচঁটি আড়ি অফিসের মাধ্যমে বিদ্যূৎ বিতরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। খাগড়াছড়ি জেলা শহরে কোন গ্রীড সাব-ষ্টেশন না থাকায় জেলা শহর থেকে ১০৫ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত হাটহাজারী গ্রীড সাব-ষ্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়ে থাকে। এতে করে প্রয়োজনীয় বিদ্যূৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়না। বেড়ে যায় তীব্র লোডশেডিং।
খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বিদ্যুত অফিস-সুত্রে জানা যায়, ৩০ কেবি সাব-ষ্টেশন থেকে ৩৩ কিঃমিঃ ও ১১ হাজার সাব-শেষ্টন থেকে ১১ কিঃমিঃ বিদ্যূত বোল্টেজ পাওয়া যায়। কিন্তু প্রয়োজনীয় দূরুত্বের তুলনায় তা অপ্রতুল। নেই কোন গ্রীড-সাব ষ্টেশন। এভাবে ১ লাখ ৩৩ হাজার সাব-ষ্টেশন নিশ্চিত করা হলে মিটে যাবে বিদ্যুতের চাহিদা। থাকবেনা কোন লোডশেডিং।
খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বিদ্যুত অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম জানান, খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ না থাকার প্রধান কারন হল, ১০৫ কিঃমিঃ দূরবর্তী এলাকা থেকে এ জেলার বিদ্যূৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এছাড়া এখানের পথগুলো পাহাড়ী ও জঙ্গল বেষ্টিত হওয়ায় সমস্যগুলো নির্ণয় করতে সময় বেশি লেগে যায়। ঘটে যায় লোডশেডিং। আমাদের তখন কিছুই করার থাকেনা। এখানে একটি গ্রীড সাব-শেষ্টন স্থাপন না করা পর্যন্ত লোডশেডিং সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয় বলে জানান।