খাগড়াছড়ির পাহাড়ে বসছে অত্যাধুনিক কেবল কার

গত রবিবার খাগড়াছড়ির আলুটিলা ও পরদিন রাঙামাটির সাজেকে গিয়ে দেখা গেছে প্রচুর পর্যটককে। বিকেলের দিকে দেখা গেল আলুটিলার গুহা দিয়ে বেরিয়ে আসছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁদের একজন ফরিদা পারভীন জানান, তাঁরা রংপুর থেকে এসেছেন। পাহাড়ের বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশ দেখে তাঁরা বিমোহিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ির আলুটিলা থেকে জেলা পরিষদ পার্ক পর্যন্ত কেবল কার বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বর্তমানে আলুটিলা থেকে জেলা পরিষদ পার্ক পর্যন্ত যেতে ৮-৯ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে হয়। কেবল কারে সেটি নেমে আসবে তিন কিলোমিটারে।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে রাঙামাটির সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। একসময় এ দুটি স্থানের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের কোনো সড়ক ছিল না। এ যেন যোজন-যোজন দূরত্বের দুই জনপদ। তবে সেই দিন আর নেই। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উঁচু পাহাড়গুলোর কখনো চূড়া আবার কখনো পাদদেশ ছুঁয়ে বানিয়েছে পাকা সড়ক। আর সেই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।
২০১৪ সালে সড়কটি চালু হওয়ার পর বদলে গেছে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির চিত্র। এ পথে এখন প্রতিদিন শত শত পর্যটকের যাতায়াত। পাহাড়ময় এলাকাগুলোতে একসময় দল বেঁধে যেতেও ভয় পেত সাধারণ মানুষ। সেখানেই এখন গড়ে উঠছে পর্যটন এলাকা।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা এ সড়কের উপযোগিতার নানা দিক তুলে ধরে। স্থানীয়রা জানায়, খাগড়াছড়ি এলাকার মানুষ একসময় অন্ধকারে ছিল। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে যেতেও তাদের কয়েক ঘণ্টা লেগে যেত। সেসব উঁচু পাহাড়ের গায়ে পাথর-পিচ ঢেলে রাস্তা বানিয়েছে সেনাবাহিনী।
খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়ক চালুর পর এখানকার অর্থনীতির চাকা সচল হয়ে উঠেছে। একসময়ের জুমচাষনির্ভর জনগোষ্ঠী নেমে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। যে আনারস পাঁচ টাকায়ও ঠিকমতো বিক্রি হতো না, সেই আনারস এখন ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। ক্রেতার অভাবে পচে যেত যে কলা, তা এখন পর্যটকদের কাছে বিক্রি হচ্ছে সমতলের দামেই। সব মিলিয়ে রাস্তাটি হওয়ার পর গড়ে উঠছে পর্যটনশিল্প। পাহাড়ি বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। দ্রুত বদলে যাচ্ছে পাহাড়ের চিত্র। সব মিলিয়ে খুশি পাহাড়ি জনপদের মানুষ।
সূত্র: কালের কণ্ঠ