খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সীমান্তে বেপরোয়া হুন্ডি ব্যবসায়ীরা

fec-image

খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারি ও হুন্ডি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। একটি আঞ্চলিক দলের সহযোগিতায় সিন্ডিকেটটি নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আনছে ভারতীয় গরু, ঔষধ, প্রসাধনী সামগ্রী, সিগারেট, ডেঙ্গু কীট, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও মাদক। সরকারি ট্যাক্স ফাাঁকি দিয়ে অবৈধপথে আসা এসব পণ্য দেশের সমতলে চলে যাচ্ছে। এমন কি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটটি নারীদের ব্যবহার করছে। অবাধে ভারতীয় পণ্য আসার কারণে হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে। আটক করতে গেলেও বাধে বিপত্তি। অনেক সময় হামলারও শিকার হতে হয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালানো হয় সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও মিথ্যা অপপ্রচার।

এক পরিসংখানে দেখা গেছে, গত ৯ মাসে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে আসা প্রায় ৭ কোটি টাকার গরু, ঔষধ, শাড়ি, প্রসাধনী সামগ্রী, সিগারেট, ডেঙ্গু কীট, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও মাদক আটক হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি পানছড়ি সীমান্তবর্তি লোগাং এলাকায় হুন্ডির মাধ্যমে আসা সাড়ে ১২ লাখ টাকাসহ দুইজনকে বিজিবি আটক করতে গিয়ে লংকাকান্ড ঘটে।

বিজিবি সূত্র জানায়, রবিবার সকাল ১০টার দিকে পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) অধীন লোগাং বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা একটি বস্তা ও দুই যাত্রীসহ রেজিস্ট্রেশনবিহীন একটি মোটরসাইকেল আটক করে। পরে বস্তা তল্লাশি করে সাড়ে ১২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু মোটরসাইকেল আরোহী রিংটু চাকমা ও ধনরঞ্জন চাকমাকে টাকার উৎস ও মালিকানা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হলে লোগাং বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার মোফাজ্জল হোসেন স্থানীয় তিন জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে টাকাগুলো জব্দ তালিকা করে এবং টাকাসহ আসামিদের পানছড়ি থানায় সোপর্দ করার জন্য আসার পথে পুজগাং বাজার এলাকায় ৫/৬ শতাধিক নারী-পুরুষ লাঠিসোট নিয়ে বিজিবির দুটি গাড়ি গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তারা হামলায় চালিয়ে টাকা ও আসামিদের ছিনিয়ে নেয় ও গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

এক পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ও জানমাল রক্ষার্থে বিজিবি’র সদস্যরা অন্তত ১৩ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং এক ঘটনাস্থল থেকে সুমন চাকমা নামে এক হামলাকারীকে আটক করে। কিন্তু এ ঘটনাকে ভিন্ন দিকে নিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালানো হয়।

খাগড়াছড়ি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. জাহাঙ্গীর আলম কোন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, একটি গোষ্ঠি নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, হুন্ডির টাকাসহ আটকদের ছিনিয়ে নিতে বিজিবি সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় বিজিবি’র ৯ সদস্য আহত হয়েছে। হামলার কাজে নারীদের ব্যবহার করেছে। বিজিবি তাদের বুঝানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এতে বিজিবি সদস্যরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।

তিনি সীমান্তে চোরাকারবারি ও হুন্ডি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিজিবি’র অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান। এ ক্ষেত্রে তিনি সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, ব্যবসায়ী, হুন্ডি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন