খাগড়াছড়ি পৌরসভার আ’লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী রফিকুল আলমসহ ৯৪ জনের জামিন
পৌরসভার নির্বাচন চলাকালে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে দায়েরকৃত পৃথক তিন মামলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. রফিকুল আলমসহ ৯৪ জনকে জামিন দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে খাগড়াছড়ি আমলী আদালতের দায়িত্ব প্রাপ্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম জিল্লুর রহমান তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রফিকুল আলমের আইনজীবী এডভোকেট আকতার উদ্দিন মামুন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাচন চলাকালে (১৬ জানয়ারি) আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, হামলা, ভোট কেন্দ্র দখল করা, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ভোটারদের মারধর, মহিলাদের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা, নৌকার সমর্থক ভোটারদের বাড়ি-ঘর এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগের চেষ্টা, লুঠপাট, চুরি, অস্ত্র তাক করে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকির অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মো. রফিকুল আলমসহ অন্তত ৯৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৩৪ জনসহ ১২৮ জন সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদীরা হলেন, খাগড়াছড়ি পৌর আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মতি মিয়া, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাব্বিরুল আলম ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুননেছা মামলাগুলো দায়ের করেন।
শালবন এলাকার মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে মো. মতি মিয়া পৌর মেয়র রফিকুল আলমসহ জ্ঞাত ২৭ জন এবং অজ্ঞাত ১০/১২জনকে আসামি করে প্রথম মামলা, একই এলাকার নুর হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী মেহেরুননেছা মেয়রসহ জ্ঞাত ৩০ এবং অজ্ঞাত ১০/১২জনের বিরূদ্ধে দ্বিতীয় মামলা ও শালবন মোহাম্মদপুর এলাকার মৃত সামছুল আলমের ছেলে মো. রাব্বিরুল আলম মেয়রসহ ৩৭ জন জ্ঞাত এবং ৮/১০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে তৃতীয় মামলাটি দায়ের করেন।
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মুহম্মদ রশীদ জানান, মেয়র রফিকুল আলমকে তিনটি মামলায় অন্যতম আসামি করে অন্তত ৯০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম বলেন, তিনটি মামলাই মিথ্যা। নির্বাচনের দিন সিসি ক্যামেরা, ডিজিটাল প্রযুক্তির পাশাপাশি এত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন থাকার পরেও এই ধরণের ঘটনার অভিযোগ হাস্যকর। রাজনৈতিকভাবে হয়রানী করার জন্য এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আদালত প্রাথমিকভাবে আমাকেসহ মামলার আসামীদের জামিন দিয়ে ন্যায় বিচার করেছেন।
প্রসঙ্গত, গেল ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্মলেন্দু চৌধুরী ৯০৩২ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বতর্মান মেয়র মো. রফিকুল আলম ( মোবাইল প্রতীক) পেয়েছেন ৮৭৪৯ ভোট, বিএনপির প্রার্থী মো. ইব্রাহিম খলিল পেয়েছেন ৪৩০৮ ভোট ও জাতীয় পাটির প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ ১৮৪ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছে।