খালেদা জিয়া’র মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানে পুলিশের বাধা
পুলিশের দফায় দফায় বাধা উপেক্ষা করে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র মুক্তি এবং বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিএনপি জেলা প্রশাসকের কাছে বিএনপির স্মারকলিপি দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বুধবার (২৪নভেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের কয়েক দফা বাধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে আদালত সড়ক এলাকায় আটকে দিলে বিএনপির একটি প্রতিনিধি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় বিএনপির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশ বিনা উস্কানীতে কয়েক দফা বাঁধা দিয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ক্ষেত্র মোহন রোয়াজা, কংচাইরী মারমা, বেলায়েত হোসেন, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, অনিমেষ চাকমা রিংকু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রব রাজা, অর্থ সম্পাদক মুফিজুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আহসান উল্লাহ মিলন, জেলা যুবদলের সভাপতি মাহবুব আলম সবুজ, সাধারন সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ হোসেন সুমন,সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আনিসুল আলম অনিকসহ জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করন, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি‘র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী সাজানো মামলায় ফরমায়েসী রায়ের মাধ্যমে কারাবন্দী করা হয়। তাঁকে যখন কারাগারে নেযা হয় তখন তিনি সুস্থ্য ছিলেন, যা দেশবাসী গণমাধ্যমে অবলোকন করেছেন। দীর্ঘ কারাবাসে তিনি ক্রমান্বয়ে অসুস্থ্য হতে থাকেন। কারাগারে নানাবিধ জটিল রোগে ভুগতে থাকলেও সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার তাঁর সুচিকিৎসার জন্য দাবি করা হলেও সরকার এ বিষয়ে সম্পূর্ণরুপে নির্বিকার।
২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে করোনা শুরু হলে বেগম জিয়াকে কারাগার থেকে নিজ বাসভবনে থাকতে দেয়া হলেও সরকার এটিকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি বলে অভিহিত করেছে। নিজ বাসভবনে অবস্থান করলেও ম‚লত: বেগম খালেদা জিয়া বন্দী এবং তার সকল মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
এর পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করোনায় গুরুতরভাবে আক্রান্ত হন। করোনা থেকে সুস্থ্য হয়ে উঠলেও পোষ্টকোভিড জটিলতা এবং এর ওপর নানাবিধ রোগে তাঁর জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে। চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডও তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন শুধুমাত্র বিএনপি-ই নয়, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও আইন বিশেষজ্ঞগণ জনসাধারণ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোচ্চার।
সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেশের প্রচলিত আইনে কোন বাধা নেই বলে আইন বিশেজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।সরকার অমানবিক সিদ্ধান্তে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে থাকা বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না দেয়া তাঁর মৌলিক অধিকার হরণ। বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে অবিলম্বে বিদেশ পাঠানো না হলে এবং এর ফলে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলে সরকার এর দায় এড়াতে পারবে না।