গণহত্যা মামলার প্রস্তুতির জন্য গাম্বিয়া, মিয়ানমারকে ছয় মাস সময় দিলো আইসিজে
রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সঙ্ঘটিত অপরাধের জন্য গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা মামলা দায়ের করেছে, সেই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সময়সীমা ঘোষণা করেছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস।
২০১৭ সালে পুলিশের চেকপোস্টে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশান আর্মির হামলার পর রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিধন অভিযান চালায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। ওই হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। যে সব রোহিঙ্গা জীবিত পালাতে পেরেছিল, তারা বলেছে তারা নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে মিয়ানমার সরকার ও সামরিক বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
অর্গানাইজেশান অব ইসলামিক কোঅপারেশান – ওআইসির পক্ষ থেকে নভেম্বর মাসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। ওই মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে মুসলিমদের উপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
গাম্বিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে আইসিজে গত সপ্তাহে মিয়ানমারকে বেশ কিছু আদেশ দিয়েছে যাতে তারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের সুরক্ষার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। আদালত বলেছে যে, এই আদেশ মূল গণহত্যা মামলার প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলবে না, যে মূল মামলাটি শেষ হতে একাধিক বছর লেগে যেতে পারে।
মঙ্গলবার আদেশ দেয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মাথায় জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ঘোষণা দিয়েছে যে, গাম্বিয়াকে অবশ্যই ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের প্রাথমিক বক্তব্য পেশ করতে হবে এবং এর জবাব দেয়ার জন্য মিয়ানমার সময় পাবে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
উভয় পক্ষ যে অনুরোধ করেছিল, তার চেয়ে আগেই এই সময়সীমা দেয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে আদালতের সামনে শুনানির সময়, আবেদনের প্রস্তুতির জন্য নয় মাস সময় চেয়েছিল গাম্বিয়া এবং পাল্টা জবাব দেয়ার জন্যও একই পরিমাণ সময় চেয়েছিল মিয়ানমার।
আইজিসে ২৩ জানুয়ারি এই আদেশ দিলো এবং উভয় পক্ষকেই তাদের প্রস্তুতির জন্য ছয় মাস করে সময় দেয়া হয়েছে। “ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি এবং মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে”।
ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টস’ গ্লোবাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ইনিশিয়েটিভের সমন্বয়ক কিংসলে অ্যাবোট দ্য ইরাবতীকে বলেছেন যে, আদালত কোন ধরনের বিলম্ব ছাড়াই মামলার কাজ এগিয়ে নিতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে।
সূত্র: South Asian Monitor