গভীর রাতে ঈদগাঁও স্টেশনে দোকান-জায়গা দখল-বেদখল : লুটপাট অব্যাহত

fec-image

কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও স্টেশনের একটি স্টিল দোকান থেকে লাখ টাকার মালামাল লুটপাটের গুরতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে বাস স্টেশন সংলগ্ন পশ্চিমে ডিসি সড়কের এবি মেটাল নামক দোকানে এ ঘটনা ঘটে।

দোকানটির যৌথ মালিক চকরিয়ার অরবিন্দু বড়ুয়া ও সাতকানিয়ার বাসুদেব। প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, উক্ত এলাকার সড়কের দু পাশের ৬ শতক করে ১২ শতক জমির রেজিস্ট্রি এওয়াজ মূলে পৃথক সমান অংশ মালিক যথাক্রমে ঈদগাঁও ইউনিয়নের উত্তর মাইজ পাড়ার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ওয়াহেদর পাড়ার আলহাজ্ব মমতাজ আহমদ (জাপানি মমতাজ) গং।

জমিটির অবস্থান ঈদগাঁও মৌজায়। ১৯৮৮ সালের ২৫৮৮ নং এওয়াজ নামা মূলে সংঘটিত ঘটনাস্থল জায়গার মালিক মূল মালিক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মালিকপক্ষের দাবি, গত ১৫ আগস্ট গভীর রাতে জমিটির উপর কয়েক দশক স্থাপিত জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ভোগ দখলীয় পাঁচটি দোকানের বহিরাংশে শতাধিক ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে দোকানের সামনের খোলা অংশ অবৈধ ভাবে দখল করে পুরাতন দোকান ঘরের সামনের অংশের দরজা গুলো কাঠ দিয়ে চলাচলের পথসহ দোকানগুলো বন্ধ করে দেয়।

সেদিন রাতে সংবাদ পেয়ে তখনই জমি ও দোকান মালিক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ৯৯৯ এ অভিযোগ করলে, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রেকে নির্দেশনা দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রাতেই টহল পুলিশ দল সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ওই ঘটনার পরের দিন জমি মালিক পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র লিখিত অভিযোগ করেন।

এর পরের দিন বিবাদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে শালিশী বৈঠকের আয়োজন করে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। তবে বৃহত্তর সমাধানের স্বার্থে ঐদিন ঘটনাটি নিষ্পন্ন না করে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে দায়ীত্ব প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা।

একই সময়ে আইনি মতামতের জন্য উভয়পক্ষকে আইনজীবী নিয়োগ করতে বলে পুলিশ কর্মকর্তা। অপরদিকে উভয় পক্ষের সম্মতিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুলিশের অনুরোধে কক্সবাজার আদালতের সরকারি প্রসিকিউটরকে দ্রুত সময়ে নিরেপক্ষ রিপোর্ট দিতে বলা হলেও তিনি রিপোর্ট দিতে একটু বিলম্ব করেন বলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দাবি।

এই সুযোগে কয়েক দফায় দখলদার মমতাজ গংয়ের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা প্রথমে ২২ আগস্ট গভীর রাতে দুই দোকানের মালামাল লুট করে তাতে জবর দখল প্রতিষ্ঠা করে,তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দোকান ২ টিকে ভাড়া দেয়।পরে সেখানে বসবাসরত এক হিন্দু পরিবারকেও রাতের হুমকি ধমকি দিয়ে উচ্ছেদ করে।

একের পর এক সংঘটিত ঘটনায় নিরুপায় জায়গা ও দোকান মালিক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করা হলে তিনি ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে এর তদন্ত ভার দেন। কিন্তু মালিকপক্ষের অভিযোগ , তারা পুলিশের আশানুরূপ সহায়তা না পাওয়ায় কয়েক দফা জবরদখল ও লুটপাটের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে । সর্বশেষ গত মঙ্গলবার গভীর রাতে উক্ত জমিতে থাকা এবি মেটাল নামক একটি স্টীলের দোকান থেকে স্টিল ব্যান্ডিং মেশিন, ওয়েল্ডিং মেশিন, ৬ টি স্টিলের সিট, ২০/২৫ টি স্টিলের রেডিমেড আলমারি ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সহ ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যমানের মালামাল লুটপাট করে মমতাজ গাংয়ের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় ভুক্তভোগী জমি ও দোকান মালিক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান জমির মালিক পুত্র শিহাব। দ্রুত সময়ে এ বিরোধে প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করলে খুনেরমত বড় ধরণের ঘটনার আশংকা করছে বাজারের দোকানদার ও সচেতন জনগণ। এদিকে অভিযোগ উঠা পক্ষ এ নিয়ে কোন প্রকার মুখ খুলছেনা গণমাধ্যমের নিকট।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান জানান, বিরোধীয় জমির দোকানে সর্বশেষ গঠিত লুটপাটের ব্যাপারে যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবীর চৌধুরী হিমু তাকে অবহিত করলে, তিনি থানায় মামলা করলে মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করবেন বলে জানান । এর আগে দু’দফে সংঘটিত লুটপাটের ঘটনায় বিরোধীয় উভয়় পক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এর একটি মামলার তদন্তভার তার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মোঃ ইমরানকে এবং অন্যটির তদন্তভার এসআই দীপঙ্করকেে দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন