গাজায় সহায়তা নিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস
গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ। প্রস্তাবটি ১৩-০ ভোটে পাস হয়েছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শত্রুতা বন্ধসহ টেকসই শর্ত তৈরি করার জন্য’ প্রস্তাবটি পাস হয়। প্রস্তাবের বিপক্ষে কেউ ভোট দেয়নি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল।
নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্য রাশিয়া বলেছে, এই প্রস্তাব একটি ‘দন্তহীন’ ও ‘অক্ষম’ প্রস্তাব।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। প্রস্তাবটির খসড়ায় গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধীতার কারণে যুদ্ধবিরতি কথাটি পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছে। এরবদলে শুধু মানবিক সহায়তার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে প্রায় দুই সপ্তাহের আলোচনা ও ভোটাভুটি নিয়ে কয়েক দিনের বিলম্বের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি সমঝোতা হয়।
সংশোধিত এ প্রস্তাবে এখন আর গাজায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য সহায়তা সরবরাহের ক্ষেত্রে ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণ কমানো যায়নি। মিসর থেকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় সহায়তা সরবরাহের যে সীমিত কার্যক্রম চলে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছে ইসরাইল। কারেম শালম ক্রসিং দিয়েও সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়টি নজরদারির আওতায় রেখেছে তারা।
জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নিবানজিয়া বলেছেন, এই প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে বলা হয়নি। এর বদলে এ প্রস্তাবের মাধ্যমে ‘মুক্ত হস্তে’ ইসরাইলকে তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
পাসকৃত প্রস্তাবটিতে যা বলা হয়েছে
সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাছে বাধাহীনভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে।
একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির অবস্থা তৈরি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ত্রাণ সরবরাহের জন্য যত পথ আছে তার সবগুলো ব্যবহার উপযোগী করে দিতে হবে।
জাতিসংঘের প্রধানের প্রতি একজন কর্মকর্তাকে নিযুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। যিনি ত্রাণ বিতরণের বিষয়টি দেখবে।
বন্দীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
মানবিক সহায়তা পূরণে গাজায় পর্যাপ্ত জ্বালানি প্রবেশ করার দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১১ হাজারেরও বেশি শিশু এবং নারী। আহত হয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি।
গত মাস থেকে অবরুদ্ধ ছিটমহলে ইসরাইলের অবিরত বিমান ও স্থল হামলায় হাসপাতাল, মসজিদ এবং গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ইতোমধ্যে ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করেছে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসরাইল।
এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ বলেন, শনিবার সকালে ইসরাইলে পাঁচ হাজার রকেট বর্ষণের মাধ্যমে ‘অপারেশন আল-আকসা স্ট্রম’ শুরু হয়েছে। ইসরাইল গাজা থেকে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করেছে। সূত্র : আল-জাজিরা