parbattanews

গুইমারায় দুই সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু: পরিবারের দাবি হত্যা

খাগড়াছড়ির গুইমারায় দুই সন্তানের জননী জান্নাতুল ফেরদৌস (২৩) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস উপজেলার জালিয়াপাড়া হাজী পাড়া এলাকার বক্কর মিয়ার ছেলে প্রবাসী আলী হায়দারের স্ত্রী ও মাটিরাংগা নতুন পাড়া এলাকার আবু তাহেরের মেয়ে।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় নিহতের স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জান্নাতুলের পিতা আবু তাহেরের অভিযোগ তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিষ দিয়ে হত্যা করেছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ের মুখে পোরাড়ন (শুকনো জাতীয় বিষ) ঢুকিয়ে পানি ঢেলে দিয়েছে হায়দারের মা, বোন ও বোন জামাই। খবর শুনে তিনি দ্রুত মানিকছড়ি হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে বলেছেন চার ঘন্টা পূর্বে জান্নাতুল পোরাড়ন খেয়েছেন কিন্তু চার ঘন্টা পর হাসপাতালে আনলে বাঁচানো কি সম্ভব? পরে মানিকছড়ি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাতুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবু তাহেরের অভিযোগ পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েটোকে হত্যা করেছে শশুর বাড়ির লোকজন। তারা কাছের বিজিবি হাসপাতালে তাৎক্ষনিক না নিয়ে চার ঘন্টা পরে মৃত মেয়েকে মানিকছড়ি হাসপাতালে নেওয়ার কারণ কি ছিলো।

আবু তাহের আরো বলেন, মেয়েটোকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে শশুর শাশুরী ও স্বামীর বোনেরা নানানভাবে নির্যাতন করে আসছে। এসব নিয়ে দুই বার সামাজিক বৈঠক হয়েছে। এত নির্যাতনের পরেও দুটি সন্তানের কারণে সর্ম্পকটা শেষ করেনি তার মেয়ে। এদিকে নিহতের শশুর বাড়ির লোকদের দাবি, পারিবারিক কলহ, আর স্বামীর সাথে রাগ করে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে তাদের পুত্রবধূ। দাম্পত্য জীবনে তাদের জোবায়েদ (৭) ও জাহেদ (৫)নামে দুই পুত্র সন্তানের জননী ছিলেন।

স্বামী হায়দারের ছোটভাই হোসেন আলী জানান, শশুর বাড়ির দাওয়াত নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া ছিলো ব্যাগপত্র নিয়ে হায়দার ঢাকায় চলে য়ায় ।পরে ঢাকা থেকে সোদি আরবে চলে গেছে বলে নিশ্চিত হয়েছে সে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, ঘটনার দিন দুপুর বেলায় হায়দার আলী অন্য নারীর সাথে মোবাইলে চ্যাটিং করছে। এমন সময় জান্নাতুল বাধা দিলে হায়দার তাকে মারধর করে। বাড়ি থেকে চলে যায়। বিদেশ থেকে তিস মাসের ছুটিতে এসে বাড়িতে ১৫ দিনও ছিলো না।

তারা আরো জানান, বিয়ের পর থেকে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিলো তাদের।মেয়েটিকে দীর্ঘদিন শশুর বাড়ির লোকজন অত্যাচার করতো। শশুর বাড়ির লোকজন প্রভাবশালী স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দায়িত্বে আছে। প্রশাসনের সাথে রয়েছে ভালো সম্পর্ক। যার কারনে কেও চাইলে ও মেয়েটাকে সহযোগিতা করতে পারেনি। স্বামী হায়দার আলী আরেকটি সংসার করেছে এমন অভিযোগ করেছে বিষয়টি জান্নাতুল তার পিতাকে অবগত করেছিলেন বলে তারা জানান।

এবিষয়ে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো. মিজানুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়েছ। এঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে নিহত জান্নাতুলের পিতা আবু তাহের বাদী হয়ে গুইমারা থানায় আত্ম হত্যার প্ররোচনার অপরাধে স্বামী হায়দার শশুর বক্কর শাশুরী হাজেরা বেগম, দেবর আলী হোসনসহ মোট আট জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। মামলার পর থেকে জান্নাতুলের শশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছ। আসামীদের আটকের বিষয়ে চেষ্টা পুলিশের চলমান রয়েছে। মামলার তদন্তের চলমান রয়েছে।

Exit mobile version