গুম জীবনে ব্রিগেডিয়ার আজমি এসি রুমে ছিলেন, ব্যারিস্টার আরমান ছিলেন হাই রাইজ ভবনে। গুম হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের শেরাটনের খাবার ও 'হুর পরীদের' সেবাযত্ন যদি দেওয়া হয় তাতে গুম অপরাধের গুরুত্ব কমে না বলেছেন, পলাতক হাসিনা রেজিমে আত্মগোপনে থেকে আয়না ঘরের তথ্য প্রথম প্রকাশকারী সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইলেকশন কর্নেল হাসিনুর রহমান বীর প্রতীক।গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনুস বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা ও বিদেশী গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নিয়ে বহুল সমালোচিত আয়না ঘর পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আজমি, ব্যারিস্টার আরমান সহ গুম হওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগী। তবে এ সময় রাখা হয়নি বিগত রেজিমে দুইবার গুম হওয়া আলোচিত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান বীর প্রতীককে।এ নিয়ে গতকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এহেন প্রেক্ষাপটে অবশেষে মুখ খুললেন এই সেনা কর্মকর্তা। নিজের এক ফেসবুক পোস্টে তিনি অভিযোগ করলেন, গুম কমিশনের কর্মকর্তা নাবিলা তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছেন।আজ বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেইজে দেয়া এক পোস্টে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিন বলেন, "চরম ভাবে মর্মাহত। জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে থেকে আয়না ঘর কে জনসম্মুখে আনি আমি। আমি আয়না ঘরের বিস্তারিত জেনে ছিলাম। প্রথমে আলজাজিরা টেলিভিশনে ইন্টারভিউ দেই,তা বিশেষ কোন কারনে হয়তো প্রচার হয়নি।আমায় সাহায্য করে জুলকারনাইন সামীর,তারপর জুলকারনাইন এর হাত ধরে তাসনিম খলিলের নেত্র নিউজ।যা প্রচার হয় ২০২২ সালের জুলাই মাসে। এরপর বিদেশি বাংলা চ্যানেল গুলোতে জেনারেল আজমী জীবিত এবং আয়না ঘরের অবস্থান সুন্দর করে বুঝিয়ে দেই। আমার বিরুদ্ধে ১০ এর অধিক আইসিটি ধারায় মামলা হয়। মানবাধিকার কর্মী ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টি উপস্থাপন করি।গতকাল প্রধান উপদেষ্টা সরজমিনে দেখতে যান। আমি ছাড়া অনেক ই ছিলেন। যারা গিয়ে ছিলেন তাদের লজ্জা লাগে নি। আমি মনে করি আমি সব কিছু বলে খোলসা করে দিবো। ১১ তাং রাতে গুম কমিশনের সদস্য নাবিলা আপু কে রিং করে ছিলাম। এমন ভাব নিলেন উনি তেমন ওয়াকিবহাল নন। তবে আমি নিশ্চিত ছিলাম পরিদর্শনে বিষয়ে সবটাই নাবিলা করেছেন।এখন কথা নাবিলা আমাকে কেন সংযুক্ত করেননি। আসলে নাবিলা পর্দার আড়ালে ফ্যাসিস্ট কে সাহায্য করছে। যারা গিয়েছেন তারা সরকারের জন্য তথা মামলা প্রমাণে ভূমিকা রাখতে পারবে না। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে যদি একজনের নাম থাকে,তা আমার থাকার কথা। আসিফ নজরুল ও নাবিলা গং দের নজরে রাখতে হবে।একটা বিষয় পরিষ্কার করে করা দরকার। গুম হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত দের শেরাটনের খাবার ও হুর পরীদের সেবাযত্ন যদি দেওয়া হয় তাতে গুম অপরাধের গুরুত্ব কমে না। তবে তুলনা করা যায়। আমরা কে কেমন ছিলাম। জেনারেল আজমী ছিলেন এসি রুমে, খাবার পছন্দে স্বাধীনতা ছিল, ব্যারিস্টার আরমান ভাই উচ্চ কমপ্লেক্স এ ছিলেন। এখানে গরম কম।আর আমি ছিলাম ওভেন এ। ১০ রুমের কমপ্লেক্স। কূটনৈতিক ক্যাপ্টেন মারুফ জামানের ভাষায় আমার সেল গুলো হলো টর্চার সেল। কারণ তিনি উভয় সেলে ছিলেন।আরমান ভাই কোন সুবিধা পাননি যা জেনারেল আজমী পেয়েছন। আমি তো তুলনা করবোই।একে ১০ সেল তার সাথে বড় বড় শব্দ সৃষ্টি কারী exhaust fan । সব কিছু মিলিয়ে ব্যারিস্টার আরমান ভাই কে দীর্ঘ আয়ু র জন্য দোয়া রইল।বি জেনারেল হাসান নাসির সহ আমরা আয়না ঘর থেকে বন্দীদের মুক্তি র জন্য কচুখেত চেকপোস্টের সামনে ৫ আগষ্ট ২০২৪ মধ্যে রাত পর্যন্ত দাবী নিয়ে ছিলাম। গুম কমিশনের নাবিলা আমাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। জেনারেল আজমীর কী উচিত ছিল না বি জেনারেল হাসান নাসির ও হাসিন কেন থাকবে না এটা জানা। "