গোপনে মিয়ানমারে ফিরে গেছে আরও ২৮ রোহিঙ্গা

fec-image

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ২৮ সদস্যের আরও ছয়টি রোহিঙ্গা পরিবার গোপনে মিয়ানমারে ফিরে গেছে বলে জানা গেছে। গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতের কোনো এক সময় তারা সীমান্ত পেরিয়ে চলে গেছে। অন্যদিকে মিয়ানমার দুই শতাধিক রোহিঙ্গা ফিরে গেছে বলে দাবি করে আসছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ৯নং ক্যাম্পের বি ব্লক থেকে ওই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেছে বলে খবর পাওয়া যায়। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াদের মধ্যে মংডুর বলিবাজার এলাকার মো. সিরাজের ৪ সদস্যের পরিবার ও উত্তর রাখাইনের লংডং এলাকার সাব্বির আহমদের ৫ সদস্যের পরিবারের নাম পাওয়া গেছে।

অন্য চার পরিবারের নাম-ঠিকানা জানা না গেলেও ওই ক্যাম্প ও পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বালুখালী ১০নং ক্যাম্পের মাস্টার নুরুল কবিরসহ বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, গোপনে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া ব্যক্তিরা ইয়াবা গডফাদার। ক্যাম্পে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারিতে ছিল। নিজেদের রক্ষার্থে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে মিয়ানমারে চলে গেছে।

অন্য বেশ কিছু রোহিঙ্গা জানান, এখানে দুই বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা কোনো কূলকিনারা দেখছে না। ফিরে যাওয়ার অনেক রোহিঙ্গা আছে। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে মুখ খুলে বলতে পারছে না। আর প্রত্যাবাসনের যে প্রক্রিয়া তাতে সহজে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে বলে রোহিঙ্গারা বিশ্বাস করতে পারছে না। তাই যারা সুযোগ পাচ্ছে গোপনে রাখাইনে নিজ ঘরবাড়ি বা গ্রামে ফিরে যাচ্ছে বলে তারা জানায়।

বালুখালী ৯ নং ক্যাম্পের অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপসচিব মো. হাফিজুল ইসলাম গোপনে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার তথ্য জানা নেই বলে জানান। তবে কিছু রোহিঙ্গার সাথে মিয়ানমার আর্মির গোপন যোগাযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বেও বেশ কিছু রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে গেছে এবং এ ধরনের বিচ্ছিন্নভাবে কিছু রোহিঙ্গা গোপনে চলে গেলেও তাদের অবহিত করে না বলে তিনি জানান।

এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে গেছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। এসব রোহিঙ্গার পরিচয় যাচাই চলছে বলে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির শ্রম, অভিবাসন ও জনসংখ্যামন্ত্রী ইউ থেইন সিউ জানিয়েছেন। থেইন সিউ জানান, ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে রাখাইনের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে বাস করা অসুবিধাজনক ছিল উল্লেখ করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,‘অপর প্রান্তে বাস করা অসুবিধাজনক হওয়ায় তারা নিজেদের মতো করে ফিরে এসেছে। পরিচয় যাচাইয়ের পর কেবল তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে।  তিনি জানান, পরিচয় যাচাই শেষে এসব রোহিঙ্গাকে তাদের গ্রামে ফেরত পাঠানো হবে, যেখানে তাদের স্বজনেরা এখনো বাস করছে।

২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম তারিখ ঠিক হয়েছিল। মিয়ানমারের অসহযোগিতামূলক আচরণের কারণে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনে তখন অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। সর্বশেষ ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ ছিল। তবে ওই দিনও রোহিঙ্গাদের অনিহার কারণে প্রত্যাবাসন হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন