ঘুমধুমে ইটভাটায় অবৈধভাবে পুড়ছে কাঠ : নির্বিকার প্রশাসন
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে স্থাপিত ইটভাটায় প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধভাবে গাছের লাকড়ি পোড়ানো হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়লার পরিবর্তে বনায়নের কচিকাঁচা গাছ কর্তন করে প্রতিদিন হাজার হাজার মন লাকড়ি পোড়ানোর ফলে পরিবেশ মারাত্মক দূষিত হয়ে পড়েছে এমন অভিমত স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজের।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ঘুমধুম ইউনিয়নের আজুখাইয়া, মগ পাড়া, ফাত্রাঝিরি, রেজু আমতলী, ভালুকিয়া পাড়া, বৈদ্যরছড়া ও বরইতলী সহ কয়েকটি এলাকায় ৭টি ইটের ভাটা রয়েছে। ওই ইট ভাটা গুলোতে পোড়ানো হচ্ছে বনায়নের লাকড়ি। শুধু তাই নয় শ্রমিক হিসেবে শিশুদেরকে ব্যবহার করছে যা শিশু অধিকার আইনে চরম পরিপন্থী। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই এবং লাইসেন্স বিহীন এসব ইটের ভাটা স্থাপন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সরকার প্রতিটি ইটের ভাটায় ঝিকজাঁক পদ্ধতিতে অর্থাৎ পরিবেশ বান্ধব কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর কথা থাকলেও এখানকার সব ইটভাটায় এখনো মান্ধাতা আমলের টিনের চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিটি ইটের ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে বনাঞ্চলের কাঠ।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আজুখাইয়া এলাকায় স্থাপিত মেম্বার আবুল কালামের ইট ভাটায় অতিসম্প্রতি অভিযান চালিয়ে উপজেলা প্রশাসন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় সহ কাঠ না পুড়ানোর জন্য নির্দেশ দেন। অভিযোগে প্রকাশ প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় মেম্বার ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ইটভাটায় দিবা রাত্রি অবৈধ ভাবে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।
তথ্যমতে জানা যায়, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ২০ লক্ষ টাকার তহবিল সংগ্রহ করে নাইক্ষ্যংছড়ি এবং বান্দরবান জেলায় স্তরে স্তরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে এসব ইটভাটা গুলো পরিচালিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘুমধুম ফাত্রাঝিরি বনবিট কর্মকর্তা, ইটের ভাটায় গিয়ে প্রতি সাপ্তাহে মাসোহারা নিয়ে আসেন। ইটের ভাটায় যেভাবে কাঠের আগুন জ্বলছে যেন থামানোর কেউ নেই।
পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই ঘুমধুমে স্থাপিত ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে কাঠ পোড়ানো বন্ধ সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।