ঘুমধুমে ভয়াবহ বন‌্যায় ব‌্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা, পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা

fec-image

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকা স্মরণ কালের ভয়াবহ বন‌্যায় প্লাবিত হয়েছে। টানা ভারী বর্ষণে উপর থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছ কয়েক শতাধিক মানুষ।

গেল সোমবার থেকে টানা প্রবল বর্ষণের কারনে তুমব্রু এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়। ২৭ জুলাই এক কিশোর নিহত হয়। আজকেও ফের ভারী বর্ষণ চলায় পাহাড় ধসে একাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে তুমব্রু বাজারের দোকান পাট।

তুমব্রু গ্রামের কোনার পাড়া, পশ্চিমকুল, মধ্যম পাড়া, হিন্দু পাড়া, উত্তর পাড়ার প্রায় ২ শতাধিক বাড়ি পানির নিচে ছিল। টানা বৃষ্টির কারণে এলাকার পাশাপাশি ১০/১৫টি মুরগীর খামারও পানিতে তলিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারীরা। এতে খামারীরা প্রচুর ক্ষয় ক্ষতির শিকার হয়েছে । তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি।

এরই মধ‌্যে পানির প্রবল স্রোতে শাহজাহান, ফজর আলী, আলম, মোকতার , আলম, মির আহম্মদ খলিফা, বাইগ্যা, আব্দুল করিম, আকতার, মুন্নি, রাবিয়া, খদিজা , আলম, ছেয়দ খলিফা, উসমান, আব্দুল গফুর, মো. আমিনের ঘর সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে।

মুজিব শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত উপহার সৈয়দ আলমের বাড়ি পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে যায়।

অন‌্যদিকে কোনার পাড়ার পানিতে তলিয়ে গেছে আবু ছিদ্দিক, আবুল বশর, জাফর আলম, মোহাম্মদ আলম, হাফেজ আবুল কালামেরসহ ৩০/৪০টি বাড়ি। পাশের নো ম্যানস ল্যান্ডের রোহিঙ্গার ঘর বাড়িও প্লাবিত হলে, তারা পাশের পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে এবং নো ম্যানস ল্যান্ডের রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

একদিকে লকডাউনের উপর এ বিপর্যয়ে চরম অসহায়ত্বের কবলে ঘুমধুম তুমব্রু গ্রামের মানুষ। খাল-বিল পানিতে একাকার।চারদিকে পাহাড়ি ঢলে এসে জোয়ারের পানির ধাক্কায় রাস্তা-ঘাট ডুবে জনজীবন বিপর্যস্থ ও কোথাও-কোথাও পাহাড় ধ্বংসের ঘটনাও ঘটেছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি এম ছৈয়দুল বশর জানান,’ ভারী বৃষ্টি হওয়ায় এলাকার পশ্চিমকূলসহ কয়েকটি পাড়ায় পানিতে প্লাবিত হয়।’তিনি বলেন, ‘প্লাবিত এলাকায় মানুষের পাঁশে দাড়ানোর জন্য স্বউদ্যোগে নিজেই নৌকা নিয়ে পানি বন্দি মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে যান। ‘

এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও বৃষ্টির শুরুতে জনসচেতন মূলক পাহাড় ধস, অতি বৃষ্টির হলে নিরাপদ আশ্রয়ে আসার জন্য মাইকিং সহ প্রতিটি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড মেম্বার ও জনগনকে সজাগ থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করি।

তিনি আরও বলেন, সোমবার সন্ধ্যা থেকে একটানা ভারি বৃষ্টি হওয়াতে পাহাড়ি ঢলের কারণে এলাকার মানুষ বুঝে ওঠার আগে পানিবন্দী হয়, কোনার পাড়াসহ বেশ কয়েকটি পাড়ার প্রায় ২শত পরিবার। তৎমূহর্তেই বের হয়ে পানি বন্দী মানুষকে পানিবন্দী অবস্হা থেকে মুক্ত করার জন্য দ্রুত নৌকার ব্যবস্হা করে প্লাবিত মানুষের গবাদি পশু এবং মানুষকে অক্ষত অবস্হায় ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।

পরিষদের আশ্রয়ে থাকা স্হানীয়দের ২দিন ধরে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান তিনি। তিনি তুমব্রু এলাকায় প্রায় ৪০০শত পরিবারসহ ঘুমধুম ইউনিয়নের প্রায় ৭শত পরিবার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন