ঘুমধুমে সংখ্যালঘুর ধোয়াতুলে শ্রমিকলীগ নেতার বিরুদ্ধে জায়গা ও জনচলাচলের পথ দখলের অভিযোগ

fec-image

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নে তুমব্রুতে সংখ্যালঘুর ধোয়া তুলে প্রায় ৫০ বছরের ভোগ দখলীয় বসতভিটির জায়গা জবর দখল করে সন্তুষ্ট হয়নি সরকার দলীয় এক শ্রমিকলীগ নেতা।

ফের আরো জায়গা জবরদখলে নিতে পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে সে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের শ্রমিকলীগের সভাপতি বাদল কুমার ধর বাঁশী সরকার দলের প্রভাব কাটিয়ে এবং সংখ্যলঘুর ধোয়া তুলে ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৭১নং মৌজার তুমব্রু পশ্চিমকূল-পাহাড় পাড়ার স্থানীয় কয়েকটি বাঙ্গালী পরিবারের বংশপরম্পরায় বসবাসরত অন্তত ২ একর জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়েছে অন্তত বহু আগেই। ফের নতুন করে দখলে নিয়েছে জনচলাচলের পথও এবং পথের ধারে থাকা ১০/১২টি গাছ কেটে অন্তত লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বাঁশী গং। বাঁশীর দংল কাজে প্রায় প্রতিবারই সহযোগী হিসেবে থাকে তার ছেলে উত্তর ঘুমধুম আজুখাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুপলা কুমার ধর।

জানাগেছে বাদল কুমার ধর বাশিঁর পিতা মৃত নিরঞ্জন ধর তুমব্রু পশ্চিমকূল এলাকার মৃত ফজল করিমের নিকট থেকে দেড়শত শতক(পৌনে ৪ কানি) তৃতীয় শ্রেণীর জায়গা ক্রয় করে ভোগদখলে ছিল। নিরঞ্জন ধর মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ ছেলে বাদল কুমার ধর বাশিঁ সরকার দলের শ্রমিকলীগের ঘুমধুম ইউনিয়ন সভাপতি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে এবং সংখ্যালঘুর ধোয়া তুলে পৈতৃক সম্পত্তির অজুহাতে স্থানীয়দের বিপুল ভোগ দখলীয় (খাসঁ) জমি দখলে নিয়ে বিভিন্নজনকে অন্তত ৬ একর জমি বিক্রী করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বাঁশী গংয়ের নিকট থেকে যারা জায়গা ক্রয় করেছেন, তারা হল তুমব্রুর আবদুল কাদের কে ২শত শতক, জলপাইতলীর নুর আহমদ কে ৪০ শতক, পশ্চিমকুলের হাজী নুর আহমদকে ৪০ শতক, উত্তর পাড়ার নাজু মিয়া সওদাগরকে ২৮০ শতক, পশ্শিমকুলের জামাল উদ্দিন কে ৪০ শতক।

মৃত নিরঞ্জন ধরের ক্রয়কৃত জায়গার পরিমান শুধু একশত ৫০ শতক। বাদল কুমার ধর বাঁশী গং বিক্রি করেছে প্রায় সাড়ে ৫ একর(১৪ কানি)। তার দখলে আছে আরো প্রায় ৩ একর। ক্রয় করা জায়গার চেয়ে বিক্রির পরিমাণ এবং বর্তমানে দখলে থাকা জায়গা মিলে প্রায় ৮ একর। যদি কারো জায়গা জোর পূর্বক দখল করে না থাকে? তাহলে এত বিপুল পরিমাণ জায়গার কিভাবে স্বত্তবান হল প্রশ্ন জাগে।

তুমব্রু পশ্চিমকুল-পাহাড় পাড়ার বাসিন্দা আবদুল করিম সহ অনেকেরই অভিযোগ, তার বাবা মৃত সুলতান আহমদের ছেলে জাফর আলমের নামীয়( আবদুল করিমের বাবস) ১৯৭৯-৮০ সনের পূনর্বাসন প্রাপ্ত আর হোল্ডিং নং-১৩১ এর ৩ একর তৃতীয় শ্রেণীর জায়গা রয়েছে। ওই সব জায়গা থেকেও বাদল কুমার ধর বাঁশী একাংশ জায়গা দখলে নিয়েছেন শুধু নিরঞ্জন কুমার ধরের ক্রয় করা ১ শত ৫০ শতক জায়গার বাহানা দিয়ে।

শুধু তাই নয় সে প্রায় ১ শত পরিবারের চলাচলের পথটির একাংশ দখলে নিয়ে জনচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বাঁশী গংয়ের দখলে নেয়া পথটি পূর্ণউদ্ধারে স্থানীয় ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর নালিশ করে ভুক্তভোগীদের পক্ষে আবদুল করিম।

চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা নুরু মাঝি, নুরুল আলমকে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদল কুমার ধর বাঁশী গংয়ের নিকট গিয়ে দখলে নেয়া পথের সীমানা চৌহদ্দি নির্ধারণ করে দিলেও ফের উক্ত পথের একাংশ জবর দখলে নিয়েছে। প্রতিবাদ করাই উল্টো আবদুল করিমের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য সৃজন করে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আবদুল করিম সহ এলাকাবাসীর অভিযোগ এবং দাবী করছেন, বাদল কুমার ধর বাঁশীর দখলে থাকা জায়গা, বিক্রি করা জায়গা পরিমাপ করে তার বাবার ক্রয় করা ১শত ৫০ শতক জায়গা ছেড়ে দিয়ে অবশিষ্ট জায়গা ভুক্তভোগীদের বুঝিয়ে দিতে হবে। বাইরে বিক্রি করা জায়গার প্রাপ্ত অর্থ ভুক্তভোগীদের নিকট সুষম ভাগ-বন্টন করে দিতে হবে। অন্যথায় সরকারি খাস হলে সরকারে অনুকুলে নেওয়া হউক। সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃতপক্ষে জায়গা জবর দখলবাজ হিসেবে প্রমাণিত হবে বলেও দাবি স্থানীয়দের। এ বিষয়ে বাদল কুমার ধর বাঁশীর ব্যবহ্নত  নাম্বারে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্বব হয়নি।

ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, পথ ঠিক করে দিতে ওই ওর্য়াডের শফিক মেম্বার সহ তিনজন কে দায়িত্ব দিয়েছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন