ঘূর্ণিঝড় রেমাল: তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে শহরের প্রায় সবগুলো সড়ক তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে গেছে নগর জীবন।
সোমবার (২৭ মে) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় সব রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে আছে। সড়কের কোথাও কোথাও কোমর পানি হয়ে গেছে। ফলে রাস্তাঘাটে যানবাহনও চোখে পড়ছে না। এতে নাগরিক জীবনে নেমেছে চরম ভোগান্তি।
যতটুকু চোখ যায় শুধু অথৈ জলরাশি। আর দালানগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে বর্ষায় তলিয়ে যাওয়া হাওরাঞ্চলের কোনো স্থাপনা মাত্র। এ বিস্তীর্ণ জলরাশিতে নেই কোনো পথিকের দেখা। কোমর পরিমাণ পানিতে আটকে যাওয়ার ভয়ে সড়ক প্রায় যানশূন্য। মাঝে মধ্যে দু-একটি রিকশার দেখা মিললেও সেসব অর্ধেক তলিয়ে গেছে। কোনোভাবে গলাপানি থেকে মাথা তুলে চলছে রিকশা।
এ অবস্থায় জীবিকার তাগিদে যারা ঘর থেকে বেরিয়েছেন নগর ব্যবস্থাপনার প্রতি তাদের ক্ষোভের অন্ত নেই। তাদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রতি বছর নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু বর্ষা এলেই দেখা যায় সেসব পরিকল্পনা আদতে শুভঙ্করের ফাঁকি। একটু বৃষ্টিতে পুরো শহর তলিয়ে যায়। আর ভারী বর্ষণে রাস্তাঘাট ছোট ছোট নদীতে পরিণত হচ্ছে।
আবুল কালাম আজাদ নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘শহরের সব নালা সংস্কার করতে হবে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে এ অবস্থা। ভুল পরিকল্পনার ফলে সমস্যা যাচ্ছে না।’
শরিফুল ইসলাম নামে একজন বলেন, ‘আজকের বিষয় আলাদা। তবে এটা স্বাভাবিক চিত্র। শহরের খালগুলো খনন করা থাকলে হয়ত এত পানি জমতো না।’ জলের ভেতর থেকে কোনোমতে মাথা বের করে চলছে রিকশা।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, সোমবার (২৭ মে) সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।