ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’: নিরাপদে ফিরেছে সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকরা

fec-image

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সেন্টমার্টিনে তিন দিন ধরে আটকে পড়া পর্যটকরা নিরাপদে টেকনাফে ফিরেছে। দুইটি পর্যটকবাহী জাহাজে করে টেকনাফে দমদমিয়া ঘাটে শেষ বিকেলে ফিরে আসে। এ সময় অনেক পর্যটকদের উৎকন্ঠায় দেখা গেছে।

আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাট হতে এলসিটি কুতুব দিয়া ও কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনতে যাত্রী ব্যতীত সেন্টমার্টিনে যান।

আটকে পড়া পর্যটকরা নিরাপদে টেকনাফে ফিরেছে

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে বৈরী আবহাওয়া হওয়ায় টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে প্রশাসন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে গত ৮ নভেম্বর হতে সেন্টমার্টিনে ১ হাজার ২’ শ পর্যটক আটকা পড়ে। উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ছিলো আটকা পড়া পর্যটকদের অনেকেই। তিন দিন পরে আবহাওয়া অনুকুলে আসলে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আটকা পড়া পর্যটকদের ফেরাতে সকালে এলসিটি কুতুবদিয়া ও কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন জাহাজ দুটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

ঢাকা থেকে স্ব-পরিবারে বেড়াতে আসা মোঃ রায়হান চৌধুরী জানান, দ্বীপে প্রথমবারের মতো বেড়াতে এসে পরিবারের সবাই উৎফুল্ল ছিল। হঠাৎ করে বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ ও ঘুর্নিঝড়ের খবরে বেশ আতংকে ছিলাম। তবে ভ্রমনটি সারা জীবনে স্মৃতি হয়ে থাকবে।

অপর এক পর্যটক আশফাক আলী জানান, সেন্টমার্টিনের সুন্দর পরিবেশে বেশ মজা করেছি। কিন্তু আটকে পড়ার কারণে খানিক আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে। তবে সেন্টমার্টিনে প্রথম দিনের তুলনায় খাবারের দাম অনেকটা কম নেওয়া হয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, আটকা পড়া পর্যকটকদের ফিরিয়ে নিতে দুটি জাহাজ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পৌঁছে। তিনি আরো বলেন, তিনদিন পর্যন্ত পর্যটকদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধার দেখভাল করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোন ধরনের অসুখ-বিসুখ হয়নি।

সেন্টমার্টিনের কিংশুক ইকো রিসোর্চ প্রোপ্রাইটর সরওয়ার কামাল জানান, তার হোটেলে প্রায় শতাধিক পর্যটক ছিল। তিনদিন ধরে তাদের থাকা খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রি করা দেয়া হয়েছে। এটি মানবিক কারণে করা হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসায়ীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিতাস গ্যাস এলাকার মেডিক্যাল অফিসার ডা. আব্দুর রউফ রনি জানান, ৩ সদস্য নিয়ে সেন্টমার্টিনের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আসলে ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে হয়েছে। তিন দিন পর্যন্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করেন কিংশুক রিসোর্টের কর্তৃপক্ষ।

কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপদে বিকাল ৫ টারদিকে টেকনাফে নিয়ে আসা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের নির্দেশমতে দুইটি জাহাজে করে সেন্টমার্টিন থেকে পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

কক্সবাজারের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানান, সকল সতর্কতা সংকেত তুলে নেয়া হয়েছে। সকল ধরণে নৌ যান চলাচল করতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন