চকরিয়ায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ ৮ জন গ্রেফতার
![fec-image](https://www.parbattanews.com/wp-content/uploads/2025/01/1000108306.jpg)
কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপকূলীয় জনপদ বদরখালী ব্রীজের নিচে প্যারাবনে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী গণধর্ষণের ক্লুলেস ঘটনায় ওসির নেতৃত্বে পুলিশের রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ২৪ ঘন্টায় প্রধান আসামিসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামী গ্রেফতার করায় স্থানীয় জনসাধারণ ওসি মনজুর কাদেরের সন্তোষ প্রকাশ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানায়, সংঘবদ্ধ কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার পরে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে থানায় ৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার ভিত্তিতে চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভুঁইয়া’র নেতৃত্বে পুলিশের কয়েকটি টিম বিভক্ত হয়ে উপজেলার বদরখালী, মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রযুক্তির সহযোগীতায় এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ তদারকি ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগীতায় পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশের রুদ্ধশাস অভিযানের ফলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দিগ্ধ প্রথমে ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া প্রাথমিক তথ্য ও জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে ওই কিশোরীকে বদরখালী প্যারাবনে তুলে নিয়ে ৬ জন যুবক জোর পূর্বক ভাবে যৌন নির্যাতন করে। এ ঘটনায় পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী তাজুল ইসলামসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত হলেন, উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ননের ৮ নম্বর ওয়ার্ডস্থ কলেজ পাড়া এলাকার মো. ইছহাকের ছেলে মোহাম্মদ কাজল (২৩), একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঢেমুশিয়া পাড়া এলাকার আবদুল সোবহানের ছেলে মো: শাহজাহান (২৮) ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের টুটিয়াখালী পাড়ার মো: বশির (৪৫), চার নম্বর ওয়ার্ডের বাজারপাড়া এলাকার জিয়াবুল করিমের ছেলে তাজুল ইসলাম (১৮), নুরুল আফসারের ছেলে সজিব (২৫), টুটিয়াখালী পাড়ার বশির আহমদের ছেলে ছোটন প্রকাশ চোরা ছোটন (২৫), দাতিনাখালী পাড়ার আবু ছাহে ছেলে অমিত হাসান (২৫) ও বাজার পাড়া এলাকার গোলাম কাদেরের ছেলে তারেক (২১)।
জানা গেছে, আক্রান্ত ওই কিশোরী ঘটনার দিন রাতে বাঁশখালী বোনের বাড়ি থেকে সিএনজি গাড়ি যোগে মহেশখালী নিজ বাড়িতে যাচ্ছিল। গত রবিবার রাত ১০ টার দিকে বদরখালী ব্রীজ থেকে মহেশখালীগামী সিএনজি অটোরিকশায় উঠে। পরে ব্রীজের উপর গিয়ে গাড়িটি নষ্ট হওয়ার অযুহাত দেখিয়ে সিএনজি চালক গাড়ি থেকে কিশোরীকে নামিয়ে দেয়। এ সময় চারজন যুবক মুখ চেপে ধরে ভয় দেখিয়ে সড়কের পার্শ্ববর্তী প্যারাবনের বেড়িবাঁধে নিয়ে যায়। পরে ৮ যুবক মিলে ওই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এরপর কিশোরী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কিশোরীর জ্ঞান ফিরলে সে সড়কে এসে চিৎকার দিলে লোকজন জড়ো হয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বদরখালী জেরারেল হাসপাতাল পরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মনজুর কাদের ভুঁইয়া বলেন, কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনাটি ক্লুলেস ঘটনা ছিল। এই ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। ওই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের কয়েকটি টিম বিভক্ত হয়ে কাজ চালিয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে এজাহারনামীয় ৬ আসামী ও দুইজন সন্দিগ্ধ আসামী গ্রেফতার করা হয়।
চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এম এম রকীব উর রাজা বলেন, কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনাটি রাতে জানার সাথে সাথে তৎক্ষানিক থানার ওসি ও পুলিশের টিম নিয়ে ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করি। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় দ্রুত জড়িতদের গ্রেফতারে ওসির নেতৃত্বে পুলিশের বিশেষ টিম গঠন করে দেয়া হয়। ওই টিমের নেতৃত্বে পুলিশ শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারনামীয় আসামী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি জানান।