parbattanews

 চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক প্রবেশ ফি ২০ থেকে একলাফে বেড়ে ৫০

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে  শনিবার থেকে প্রাপ্তবয়স্ক জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং শিশুসহ অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছ থেকে ২০ টাকা হারে প্রবেশ ফি নেওয়া হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় নতুন অর্থবছরের শুরুর দিন থেকে এ হারে প্রবেশ ফি নেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রজ্ঞাপন জারি করে।

সাফারি পার্ক সূত্র জানায়, পার্কে প্রবেশ করতে হলে সদ্য বিদায়ী অর্থবছর (গত শুক্রবার পর্যন্ত) প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ২০ টাকা এবং অপ্রাপ্তদের জন্য ১০ টাকা হারে ফি নির্ধারিত ছিল। কিন্তু একলাফে ২০ থেকে ৫০ এবং শিশুদের ক্ষেত্রেও ১০ থেকে ২০ টাকা প্রবেশ ফি নির্ধারণ করায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

এদিকে সাফারি পার্কে প্রবেশের জন্য একলাফে এতটাকা ফি বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় এনিয়ে গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। তাছাড়া দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত এই পার্কটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বনাঞ্চলে গড়ে তোলা হলেও এখানে নতুন করে দেখার মতো বিদেশী কোন বন্যপ্রাণি আনা হয়নি। বেশ কয়েকবছর ধরেই একই প্রাণিই দেখছেন আগত পর্যটক-দর্শনার্থীরা। হঠাৎ করে প্রবেশ ফি বাড়িয়ে দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝেও ক্ষোভ এবং হতাশা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরণের সিদ্ধান্তে ভ্রমণপিপাসু শিশু, নারী থেকে শুরু করে পার্কে পর্যটক ও দর্শনার্থী আগমণে ভাটা পড়তে পারে বলেও তাদের অভিমত। অবশ্য অনেকে একলাফে এত টাকা না বাড়িয়ে সাধ্যের মধ্যে যাতে থাকে সেজন্য নতুন প্রবেশ ফি নির্ধারণেরও দাবি জানিয়েছেন।

পার্ক সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য সাফারি পার্কে প্রবেশে নতুন ফি নির্ধারণ করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় চলতি ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বর্তমান গেট ইজারাদারের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ক জনপ্রতি ২০ টাকা এবং শিশুসহ অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ১০ টাকা হারে প্রবেশ ফি নেওয়ার চুক্তি বিদ্যমান ছিল। এ কারণে এতদিন ওই হারেই দর্শনার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশ ফি নেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শনিবার থেকে নতুন হারে প্রবেশ ফি নেওয়া হচ্ছে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে। এছাড়াও গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বাসের ক্ষেত্রে ১০০ টাকার স্থলে ২০০ এবং মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে ৫০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা ফি নেওয়া হচ্ছে। আবার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দলভিত্তিক পার্ক ভ্রমণের ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ১০০জনের মধ্যে হলে নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০ টাকা। ১০০জনের বেশি হলে নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০০ টাকা।

পার্কে বেড়াতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, ‘এই পার্কে বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছি। কয়েকবছর আগেও যেসব প্রাণি ছিল, বর্তমানেও একই প্রাণি বিদ্যমান। নতুন করে কোন বিদেশি বন্যপ্রাণিও আনা হয়নি এখানে। তার ওপর এভাবে বর্ধিত হারে প্রবেশ ফি নেওয়া হলে পার্ক ভ্রমণের প্রতি দর্শনার্থীরা অনিহা প্রকাশ করবে।’

স্থানে দেশের প্রথম এই সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হলেও তা পূর্ণাঙ্গ সাফারি পার্কে রূপ দেওয়া হয়নি। এখানে নেই জিরাফ, জেব্রা, আফ্রিকান কুদু’র মতো বিদেশি কোন বন্যপ্রাণি। তাই নতুন করে এসব বন্যপ্রাণি বিদেশ থেকে এনে এই পার্ককে পূর্ণাঙ্গ সাফারি পার্কে রূপ দিতে হবে। এতে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বেশ আকৃষ্ট করবে এবং প্রবেশ ফি নিয়ে তেমন কোন ওজর-আপত্তি থাকবে না।’

পার্কের গেট ইজারাদার মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ‘একবছরের চুক্তিমতে ইজারাদার হিসেবে গত শুক্রবার পর্যন্ত তিনি টিকেট বিক্রি করেছেন। শনিবার থেকে পার্ক কর্তৃপক্ষ খাস কালেকশনের মাধ্যমে টিকেট বিক্রি করছেন।’

সাফারি পার্কের কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পার্কে প্রবেশের ক্ষেত্রে নতুন ফি নির্ধারণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নতুন অর্থ বছরের শুরুর দিন রবিবার থেকে নতুন হারে ফি পরিশোধ করে টিকেট নিয়ে পার্কে প্রবেশ করছে দর্শনার্থীরা।’

Exit mobile version