parbattanews

চকরিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি

পশ্চিম বড়ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন জেলার আন্তঃগরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান ও ইয়াবা কারবারি নবী হোছাইন (প্রকাশ নইব্যা চোরা)। নবী হোছাইন উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র।

প্রাণনাশের হুমকির পর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। যার ডায়েরী নং ৪৫৩, তাং ১২-০৬-২০১৯। বিষয়টি ১২জুন উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপিত হলে ইউপি চেয়ারম্যানগণ ইয়াবা কারবারি নবী হোছাইনকে দ্রুত গ্রেফতারের জোর দাবি জানান।

অভিযোগে জানা যায়, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিমবড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা তার ইউনিয়নে ইয়াবা বিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন। সমাজের মাদক বিরোধী অভিযানে বিভিন্ন শ্রেণিপেশা মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের মাদক বিরোধী তৎপরতায় নাখোশ হন সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার চিহিৃত চোরা কারবারি ও ইয়াবা ব্যবসায়ি নবী হোছাইন।

গত ১০ ও ১১ জুন ইউপি চেয়ারমান বাবলা ইউনিয়ন পরিষদে ইয়াবা সংক্রান্ত বিচার কার্য পরিচালনার সময় ইয়াবা কারবারি পক্ষে সশস্ত্র অবস্থায় বাধা দেন নবী হোছাইন।

একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাবলাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন তিনি। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারমান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা নিজের নিরাপত্তা চেয়ে চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এদিকে ১২জুন চকরিয়া উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় উপজেলার ১৮জন চেয়ারম্যান ইয়াবা কারবারি নবী হোছাইনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

সভায় ইউপি চেয়ারম্যানগণ বলেন, নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তিনি একজন আন্ত:গরু চোর চক্রের প্রধান হোতা। তার নিয়ন্ত্রনাধীন গরু চোর চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছে। এসব সদস্যরা সু-কৌশলে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গরু চুরি করে নবী হোছাইনের ডেরায় জমায়েত করে। এরপর চোরাইকৃত গরুর গায়ে রং লাগিয়ে রাতের আধারে বিভিন্ন স্থানে পাচার করে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, চোরাইকৃত গরুর মাংস সবচেয়ে বেশি বিক্রি করা হয় ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। তার ডেরায় জড়ো করা গরু পেশাদার কসাই দিয়ে জবাই করার পর ওই মাংস গুলো সাফারি পার্কের বাঘ ও সিংহের জন্য খাবার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছেন। এবিষয়টি বিভিন্ন সময় সাফারি পার্ক কর্তৃকপক্ষ অস্বীকার করলেও বাজারের তুলনায় মাংস সস্তায় হওয়ায় চোরাইকৃত গরুর মাংস ক্রয় করে আসতেন বলে জানান এলাকাবাসী।

থানা সূত্র জানায়, আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ি গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৬জুন চুরি ও অনধিকার প্রবেশের দায়ে মামলা রয়েছে, যার মামলা নং ৪১। সরকারি কাজে বাধাদানে গত ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর পুলিশ বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২১। অস্ত্র ও গুলাগুলির ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং-৪২। এছাড়াও ২০১৭ সালেরর ২৮ এপ্রিল স্থানীয় মারামারির ঘটনায় নবী হোছাইনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং-৫৯।

তার গরুচোর সিন্ডিকেটের সেকেন্ডইন কমান্ড মাইজঘোনা এলাকার মো: ফরহাদ গরু চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে প্রাণ হারায়। একাধিকবার নবী হোছাইনের মালিকাধীন মাইক্রোবাস ও পিকাআপ ভর্তি চোরাই গরু নিয়ে আটক করেছিলো চকরিয়া থানা পুলিশ। বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে গরুচুরির দায়ে অভিযোগ করা হলেও প্রশাসন ম্যানেজ করে পার পেয়ে যান।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলাকে হুমকির বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি জানান।

Exit mobile version