parbattanews

চকরিয়ায় ওজনে বেশি দামে কম, সাড়া ফেলেছে ”রাজ কুমার”

Exif_JPEG_420

কক্সবাজারের চকরিয়ায় কোরবানির পশুর হাট জমে উঠার আগেই পুরো এলাকা জুড়ে সাড়া ফেলেছে “রাজ কুমার”। বিশাল আকৃতির এ রাজ কুমার গরুটি দেখতে প্রতিনিয়ত এলাকার সাধারণ লোকজন ও ক্রেতারা ভিড় করছে।

এই গরুটি কিনতে চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে প্রায় দুই ডজন ব্যক্তি যোগাযোগ করেছেন। প্রায় তিন বছর ধরে লালন পালন করা ৩০ মণ ওজনের (১২০০) কেজির অধিক বিশাল এই গরুটি কোরবানী বাজারে দাম হাঁকানো হয়েয়েছ ২০ লাখ টাকা।

এ পর্যন্ত ‘রাজ কুমার’ দর উঠেছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। জেলায় এবারের কোরবানির ঈদে পশুর মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু ও আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ রাজ কুমার গরুটি বলে দাবি করেন গরুর মালিক বাদল।

জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে বাদলের খামারেই জন্ম হয় ‘রাজ কুমার’। গত কোরবানির ঈদে এই গরুটির ওজন ছিল প্রায় এক টন। সেই সময় ‘রাজ কুমারকে’ উপজেলার বড় একটি কোরবানির পশুর হাঁটে উঠানো হয়।

সেখানে ক্রেতারা এ গরুটির দাম ৮/৯ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খামারী বাদল বেশি দামের আশায় গরুটি ওই সময় বিক্রি করেননি।

গত কোরবানির হাটে এই ষাঁড় গরুটির মূল্য ক্রেতারা ৯লাখ টাকা বললেও এবার বলছেন ১০লাখ টাকা। কিন্তু গরুটির মালিক বাদল গত ঈদের হাটে দাম হাঁকছিলেন ১৫ লাখ টাকা। বেশি ওজনের ৩০মণের অধিক এ গরুটি তিনি এবার দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশ কাটাস্থ কৃষক আবু ওবাইদ বাদল কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ছোট গরুর ডেইরি ফার্ম।

বর্তমানে তার ডেইরি ফার্মে ছোট-বড়, মাঝারি মিলে ৪৪টি গরু রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য বাজার দরে প্রায় দুই কোটি টাকা হবে।

বাদলের ডেইরি ফার্মের বেড়ে উঠা সবচেয়ে বড় ষাঁড়ের নাম “রাজ কুমার”। পরম যত্নে গরুর মালিক বাদল ও তার কর্মচারীরা মিলে প্রায় তিন বছর ধরে তাকে কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা হচ্ছে গরুটি। শখ করে তার নাম রেখেছিল ‘রাজ কুমার’।

ডেইরি ফার্মের মালিক আবু ওবাইদ বাদল জানায়, গরুটির পরিচর্যা করতে আমি ছাড়াও একজন আলাদা কর্মচারী রেখেছি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের সার্বক্ষণিক পরামর্শক্রমে কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে গরুটিকে লালন-পালন করেছি। রাজ কুমার’কে নিয়মিত খড়, ভূষি ছাড়াও তাকে খাওয়ানো হয় কমলা, মাল্টা, চিড়া, সোয়াবিন, গুড়সহ নানা রকমের খাবার। খাওয়া বাবদ প্রতিদিন তার পেছনে খরচ হয় ১২শত টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা। রাজ কুমার গরম সহ্য করতে পারে না। যেখানে তাকে রাখা হয় সেখানে চারটি ফ্যান চলে।

তিনি আরও বলেন, গত কোরবানির ঈদে গরুটিকে বাজারে উঠানো হয়েছিল। তখন গরুটির ওজন ছিল প্রায় ২৫ মণ। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় গত বছর ষাঁড়টি বিক্রি করিনি।

এবার গরুটির ওজন হয়েছে ৩০ মণ (১২০০) কেজির চেয়ে বেশি।
এ ‘রাজ কুমারকে’ আরো এক বছর লালন পালন করতে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

গত বছর বিক্রি করতে না পারায় এবারও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। অন্তত এ কোরবানির সময় গরুটি’র ভালো দামে বিক্রি করতে পারলেই পরিশ্রম স্বার্থক হবে।

চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী বলেন, কৃষি চাষের পাশাপাশি গরুর ডেইরি ফার্ম করে স্বাবলম্বী হন আবু ওবাইদ বাদল। তার ফার্মে বেড়ে উঠা সবচেয়ে বড় ষাঁড় ‘রাজ কুমার’ গরুটিকে দেশীয় খাবার খাইয়ে সঠিক পরিচর্যায় ও প্রাণিসম্পদ অফিসের তদারকিতে লালন-পালন করে বড় করেছেন তিনি।

Exit mobile version