parbattanews

চকরিয়ায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

চকরিয়ায় হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় অন্তত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও বড়বড় গাছপালা উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষেতের ফসল ও লবণের মাঠ। সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পুরো উপজেলা বিদ্যুৎ হীন হয়ে পড়ে।

গতকাল বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পুরো উপজেলায় হঠাৎ করে কালবৈশাখীর ঝড়-বাতাসের সাথে শিলাবৃষ্টিও হয়। এতে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় বোরো খেতের আধাপাকা ধান পড়ে যায়। ধানের গাছ নুয়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জমির ফসল। এছাড়া একই কারণে বেশকিছু এলাকার সবজি খেত বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বাড়ি ঘরেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিভিন্ন ইউনিয়নে বাড়িঘরের উপর গাছ পড়ে ভেঙ্গে গেছে।

বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পুকুরিয়া খোলা এলাকায় বড় গাছ পড়ে বসতবাড়ি ক্ষতিস্থ হয়েছে। কোন কোন এলাকায় প্রচন্ড শিলাবৃষ্টিতে টিনের চাল ছিদ্র হয়ে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। বেতুয়াবাজার সড়কের উপর গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গত এক সপ্তাহ আগে প্রচন্ড গরম হাওয়া বয়ে যায়। ধান পাকা শুরু হওয়ায় কয়েকদিনের মধ্যেই কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিল প্রান্তিক কৃষকরা। সেই সাথে লবণ মাঠেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে ডুলাহাজারা ছগিরশাহ কাটা ও রিংভং এলাকায় রিজার্ভ বনভূমিতে ৬টি বসতবাড়িতে মাদারট্রি পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। একইভাবে কালবৈশাখীর তান্ডবে বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের পুকুরিয়া খোলা এলাকায় বড় গাছ পড়ে বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাকারা ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারসহ খুটি ভেঙ্গে পড়ে। উপজেলার বেশকটি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় সবজি ক্ষেতের।

কাকারা ইউনিয়নের করলা চাষী রিদুয়ানুল হক বলেন, সম্প্রতি ৪০ শতক জমিতে করলা ক্ষেত শুরু করি। চারাও বেশ লম্বা হয়। ফুল আসতে আরও সপ্তাহ খানেক লাগবে। এতে হঠাৎ করে কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে আমার এক লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। এদিকে আম বড় হতে শুরু করেছে। কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির কারণে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কাঁচা আম ঝরে পড়েছে।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাদিম হোসেন বলেন, সরেজমিন সবজি ও ফসলি ক্ষেতের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে ব্লক পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, কালবৈশাখীর আঘাতে কোন কোন এলাকায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নির্ণয় করা হয়নি। স্ব স্ব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির সংখ্যা নির্ণয় করে তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ পূর্বক ক্ষতিগ্রস্থদের উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

Exit mobile version