parbattanews

চকরিয়ায় খরিদা জমির বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ আতঙ্কে ২২ পরিবার

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার বাটাখালী এলাকায় ২২টি পরিবারকে বসতবাড়ি উচ্ছেদে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এক প্রভাবশালী উল্লেখিত ২২টি পরিবারকে উচ্ছেদের পর তাদের বাড়িভিটার জমি দখলে নিতে নানাভাবে অপচেষ্ঠা চালাচ্ছেন।

স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এধরণের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ২২টি পরিবারের সদস্যরা।

বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনিশ্চিত জীবনের দোলাচলে রয়েছেন এসব পরিবারের শিশু ছাড়াও শতাধিক নারী-পুরুষ।

ভুক্তভোগী ২২ টি পরিবারের পক্ষে অভিযোগ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ফোরকানুল ইসলাম।

এ সময় তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চকরিয়া পৌরশহরের দক্ষিণ বাটাখালী এলাকার মৃত নুরুল আলম মেস্ত্রীর ছেলে মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু তার মা আনোয়ারা বেগমের নামে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে একটি সাহায্যের আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে পল্টু ও তার পরিবারের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা দেন।

নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমানকে বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত পূর্বক লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

জেলা প্রশাসকে নির্দেশনা অনুযায়ী ইউএনও শিবলী নোমান বিএনপি সরকারের আমলে পল্টুর পরিবারের জমি-জমা জবরদখলে নেওয়া হয় উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনের কাছে ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনটি এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ২২ পরিবারের এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

ভূক্তভোগী ফোরকানুল ইসলাম বলেন, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু কখনোই আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা বা কর্মী ছিলেনা না। বিএনপি আমলে তার পরিবারের সবাই বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। সেই কারণে ওই সময় তার বিরুদ্ধে কোন ধরণের মামলা হয়নি।

বিগত তত্বাধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের বদান্যতা পেতে সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে একটি হয়রানীমুলক মামলা দায়ের করেন মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু।

ওই মামলায় চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাস্টার আবু তাহের ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল তার সাত ছেলেকে আসামি করে হয়রানী করা হয়।

পরবর্তীতে পল্টুর হয়রানীমুলক মামলার শোকে অকালে মারা যান মাস্টার আবু তাহের ও তার জৈষ্ঠ ছেলে শহীল ইসলাম খোকন। এছাড়াও পল্টুর মিথ্যা মামলার ঘানি টানতে টানতে সর্বশান্ত হয়েছে স্থানীয় বেশ কটি আওয়ামী লীগ পরিবার। এমনকি বর্তমান সরকারের আমলেও পল্টুর বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে একডজন মামলা হয়।

মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এরফানুল হক চৌধুরীর দায়েরকৃত একটি মামলায় এক বছর ২ মাসের সাজা হয় পল্টুর।

ভূক্তভোগী ২২ পরিবার সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, চকরিয়ার ইউএনও যে জমিগুলো নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন ওইসব জমিগুলোতে খরিদাসুত্রেই আমরা বসবাস করছি। ওই জমির বিপরীতে আমাদের নামে নামজারি জমাভাগ খতিয়ানও সৃজন হয়েছে।

কিন্তু একটি প্রতিবেদনের আলোকে বর্তমানে পল্টু আমাদের বসতবাড়ি যে কোন মুর্হুতে জবরদখলে নিতে হুমকী দিচ্ছেন। পল্টু মুলত সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ভূল তথ্য দিয়ে ভুক্তভোগী ২২টি পরিবারকে হয়রানী করছে। আমরা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষ দৃষ্টি কামনা করছি।

এছাড়াও ২২ পরিবারের পক্ষে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন সাংবাদিক ওমর আলী, আওয়ামী লীগ নেতা শফুর আলম, মো.কুতুব উদ্দিন, মাওলানা ইব্রাহিম, মো. শাহ আলম, সমাজকর্মী মো. রায়হান উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ফোরকানুল ইসলাম ও মৌলভী ইদ্রিস প্রমুখ।

Exit mobile version