লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ১৭ হাজার ৩ শত হেক্টর

চকরিয়ায় চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

fec-image

চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় ১৭ হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ বছর চাষাবাদ করতে কিছুটা বিলম্ব হলেও ঠিক সময়ে চাষিরা উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন।

প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ, সময় মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় মাঠে মাঠে বোরো ফলেছে আশানুরূপ। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। বর্তমানে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে সোনালি ধান ইতিমধ্যে কাটতে শুরু করছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বোরো ফলন ভালো হওয়ায় চলতি বছরও লক্ষমাত্রা অতিক্রম হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এমনটা নিশ্চিত করেছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার সর্বত্র এখন বোরো ফসলের মাঠে পাকা ধানের সোনালি হাসি। বৈশাখের উজ্জ্বল রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করছে। নতুন ধানের গন্ধে জনপদের গ্রামে-গ্রামে নবান্নের সাজ সাজ রব। মাঠে মাঠে কৃষকরা কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন। কুয়াশা ভেজা সকাল থেকে শুরু করে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত মাঠে-মাঠে ফসল কর্তনের চিরাচরিত দৃশ্য এখন সর্বত্র।

বর্তমানে গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন এলাকায় ধান মাড়াই, বাছাই আর শুকানোর কাজে ব্যস্ত এখানকার কৃষক পরিবার। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে এ বছর শুরুর দিকে মিঠাপানির কিছুটা সংকট থাকলেও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন কিন্তু ভালো হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও কৃষকের মন ভরছে না। কারণ বর্তমান সময়ে কৃষিতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে এতে তাদের উৎপাদন খরচই মিলছে না এমন অভিযোগও করেছেন বেশ কয়েকজন কৃষক।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়ন শাখা) রাজীব দে বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় ১৭ হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু করা হয়। তৎমধ্যে এ বছর প্রায় বার হাজার হেক্টর জমিতে উপশী জাত ও পাঁচ হাজার ৩ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়। জমিতে যেসব চাষাবাদ করা হয়েছিল তৎমধ্যে উপশী জাতের ব্রি-ধান ২৮, ৭৪, ৭৫, ৫৮, ৬৪, ৮৭ ও বঙ্গবন্ধু ১০০।

এছাড়াও স্থানীয় জাতের মধ্যে (হাইব্রিড) চাষাবাদ করা হয় হিরা, টিয়া, ময়না, হিরা ২, হিরা ৫ ও ধানি গোল্ড। মূলত জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার ও আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহারের কারণে চাষাবাদে ফলন বৃদ্ধি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কর্মকর্তা মো.মহিউদ্দিন বলেন, ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করতে চাষের শুরুতেই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে নানা দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রান্তিক কৃষকরা কৃষি বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক গুটি ইউরিয়া ও এলসিসি পদ্ধতি অনুসরণ করে বোরো চাষাবাদ শুরু করেন। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে কৃষকেরা ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারে বলে জানান।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৭ হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে। উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও মিঠাপানির সমস্যার দেয়। তারপরও কৃষকেরা ঠিকই বোরো চাষাবাদে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে ধান কাটা শেষ হয়েছে। আশাকরি ২-১ সাপ্তাহের মধ্যেই অবশিষ্ট জমির বোরো ধান কাটা শেষ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চকরিয়া, চাষ, ফলন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন