চকরিয়ায় পঞ্চাশ কোটি টাকা হাতিয়ে  পালিয়েছে এনজিও ফুয়াদের ২পরিচালক

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ফুয়াদ বাংলাদেশ নামের একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকদেরকে ১৬ শতাংশ লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের কাছ থেকে কমকরে হলেও ৫০ কোটি টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উধাও হয়ে গেছে। এ সংস্থার দু’ প্রধান নির্বাহীর বাড়ি হচ্ছে, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘুনিয়া গ্রামে।

ওই গ্রামের আলী আকবরের ছেলে ইব্রাহিম ও মাস্টার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুল মন্নান। তারা ৫-৬ বছর আগে বিপুল পরিমাণ টাকা লুটে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে কাতারে রাজধানী দোহা মাইজার নামক স্থানে অবস্থান করে বর্তমানে দেশে আত্ম গোপন অবস্থায় রয়েছে বলে ভূক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন।

এনজিও সংস্থাটি ব্যাংকের আদলে ডিপিএস, এসডিপিএস, ঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন লাভজনক পদ্ধতি দেখিয়ে গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এ বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয়। প্রতারণার শিকার একাধিক গ্রাহক গতকাল চকরিয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারীর মধ্যে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রাজার বিল গ্রামের মৃত ফতেহ্ ইউনুছ আহমেদ পুত্র শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, চকরিয়া সংবাদপত্র হকার সমিতির সভাপতি মনির উদ্দিনসহ প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছ থেকে ওই দু’ প্রতারক বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসা দেখিয়ে ৪০ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

ইতোপূর্বে গ্রাহক শহিদুল ইসলাম চৌধুরী চকরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থানা পুলিশ বেশ কয়েকবার অভিযুক্তদের বাড়িতে হানা দিলেও অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

ভুক্তভোগিরা আরো অভিযোগ করেন, এনজিও সংস্থা ফুয়াদ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকার জমি ক্রয় করে নিজের সংস্থার নামে। বর্তমান এসব জমি দেখবাল করছে তার ছোট ভাই ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মৌলনা এহেচানুল করিম।

গ্রাহকরা ওই জমি বিক্রয় করে তাদের পাওনা পরিশোদের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে প্রতারক ইব্রাহিমের ছোট ভাই এহেচানুল করিম গ্রাহকদের টাকা ফেরত চাওয়ায় উল্টো গ্রাহকদেরকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগকারীরা বলেন, ফুয়াদ বাংলাদেশ নামক এনজিও সংস্থাটি চট্টগ্রামের বহদ্দরহাট, লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ, কক্সবাজার জেলার ঈদগাও, কক্সবাজার সদর ও চকরিয়া উপজেলায় অস্থায়ী ভাড়া অফিস খুলে কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পলাকত হয়ে যায়।

বর্তমানে অর্থলগ্নকারী কয়েক হাজার পরিবার তাদের মুলধন হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এ ব্যাপারে গ্রাহকরা ওই এনজিও সংস্থার কর্ণধার ইব্রাহিম ও আবদুল মন্নানকে খুঁজে বের করে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করে দেয়ার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযুক্তরা দেশের বাইরে থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: এনজিও, কাতার, চকরিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন