চকরিয়ায় মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে হুমকি

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এক চা-দোকানদারকে গরম পানি ছুঁড়ে মেরে মারধর করে ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার বাদী নুর বেগম ও তার স্বামী মো. হারুন আসামীদের হুমকিতে নিরাপত্তা চেয়ে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।

এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের চর পাড়া এলাকার মো. হারুনের স্ত্রী বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর ৭০৭/২০ একটি মামলা দায়ের করেন। এতে বিএমচর ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও দিয়ারচর এলাকার বাসিন্দা মোস্তাক আহমদের ছেলে মিজান উদ্দিন, একই এলাকার কালু মিয়া’র ছেলে কফিল উদ্দিন, আবুল কাছিমের ছেলে মো. ইছহাক ও জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. সোহেলকে আসামি করা হয়। এদিকে মামলার আসামীদের প্রকাশ্যে হুমকিতে বাদীর স্বামী ও তার অপরাপর বাড়ির সদস্যরা তাদের ভয়ে বাড়ি যেতে পারছেন না। এমনকি দোকানপাঠে যেতেও তারা চরম নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।

মামলার বাদী নুর বেগম ও তার স্বামী হারুন সাংবাদিকদের জানান, মামলার আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের দোকানঘর ও জায়গা দখল করার পাঁয়তারা করছে। একাধিকবার জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টাও করেছে। এতে ব্যর্থ হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে চায়ের দোকানে ঢুকে আমার ছেলের ওপর আসামীরা হামলা চালিয়ে আহত করে। এসময় তার ক্যাশে থাকা নগদ টাকা ও ব্যবহৃত মোবাইল আসামিরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় ছেলেকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় ১৩ সেপ্টেম্বর চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই আসামিরা বিভিন্নভাবে মামলার বাদীর স্বামী ও তার পরিবারকে নানা হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে জি.আর ১৭৩/২০ ও জি.আর ১৭৯/২০ চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা রয়েছে। উল্লেখিত মামলায় ২নম্বর আসামি কফিল উদ্দিনের ভাই আরিফ বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। আদালত উক্ত হাজতী আসামির জামিন না মঞ্জুর করার আক্রোশে ও জোরপূর্বক দোকনঘর দখল করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে দলবদ্ধ ভাবে এ ঘটনাটি করেছে।

মামলার প্রধান আসামি ও ইউপি সদস্য মিজান উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ওয়ারিশ থেকে তারা জমি ক্রয় করেছেন। জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় আমাকে মিথ্যা ভাবে জড়িয়ে আসামি করা হয়। তাদের জায়গার ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। মামলার বাদীর পরিবারকে হুমকি, মারধর কিংবা লুটের ঘটনায় আমি কোন ধরণের জড়িত নয়। সম্পূর্ণ একটি সাজানো ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

বাদীর আইনজীবী মিফতাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে থানা পুলিশকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চকরিয়ায়, মামলা, হুমকি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন