চকরিয়ায় ১৪৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে নতুন শহীদ মিনার
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা জনপদে অবস্থিত ১৪৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এইপ্রথম একসঙ্গে নির্মিত হচ্ছে স্বাধীনতার অন্যতম স্মতিফলক শহীদ মিনার নির্মাণ। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এর সার্বিক দিকনির্দেশনার আলোকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে এই মহতি কার্যক্রমটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার।
উপজেলা শিক্ষা বিভাগের বরাদ্দের বিপরীতে চলতি অর্থবছর উপজেলার ১৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৪০টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে চারটি বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমটি এখনো শুরু যায়নি। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার আশা করছেন, জমি সংক্রান্ত জটিলতা কেটে গেলে সহসা উল্লেখিত চারটি বিদ্যালয়েও শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
শহীদ মিনার নির্মাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে চকরিয়া উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ে চলমান শহীদ মিনার নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শন এবং লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত শহীদ মিনার শুভ উদ্বোধন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তার।
উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) সভাপতি সরওয়ার উদ্দিন, সহকারি শিক্ষকবৃন্দ এবং এলাকার সুধীজন।
চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার বলেন, মায়ের ভাষা বাংলার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মরণে এবং ও বাংলা ভাষার প্রচলন সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চকরিয়া উপজেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে শহীদ মিনার। সরকারি বরাদ্দের আলোকে ইতোমধ্যে বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এরই মধ্যে শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে ছড়িয়ে দিতে আমরা প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ নির্দেশনা। এতদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশেষ দিবসগুলোতে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শ্রদ্ধা জানাতো। এখন নিজের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঘরের কাছেই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবে।
লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন শেষে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, চকরিয়া উপজেলার ১৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একসঙ্গে নতুন শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়টি নি:সন্দেহে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ভালো একটি উদ্যোগ।
তিনি বলেন, নিজের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার পেয়ে এখন থেকে ছোট একটি শিশু ও জানতে পারবে ভাষা দিবস কী, কেন এবং এদিন শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়। আমরা চাই, ভাষা দিবসের তাৎপর্য, দেশপ্রেম, শ্রদ্ধাবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবে। তিনি শিক্ষাখাতের অগ্রগতি উন্নয়নে পাশে থাকার অভিমত প্রকাশ করেছেন।