চট্টগ্রামে ঈদগাঁওয়ের তরুণ আলেমের রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা!

চট্টগ্রামের বাসায় আকস্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করেছে তরুণ আলেম শোয়েব রশিদ(২৯)। তবে লাশ উদ্ধার পরবর্তী সময় যতই গড়াচ্ছে মৃত্যু রহস্য ক্রমশ: প্রশ্নের সৃষ্টি করছে।
মৃত্যুর শিকার শোয়েব রশিদের পৈত্রিক এলাকা কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাঁশকাটা গ্রামে। তার পিতার নাম মরহুম মওলানা রশিদ আহমদ।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকালের দিকে কোন এক সময়ে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছে তার নিকটাত্মীয়রা। তবে তারা দুপুরের দিকে মৃত্যুর সংবাদ পায় বলে দাবি করেন।
মৃত শোয়েবের নিকটাত্মীয় দিদার প্রতিবেদককে মোবাইলে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে তারা শোয়েবের শ্বশুর পক্ষের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো, বনানী আবাসিক, চাইল্লাতলি রোড , কাশেম বিল্ডিংস্থ শোয়েব তার ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেছেন। এ সংবাদ পেয়ে তারা শোয়েবের স্ত্রী ফায়েকা খানমের সাথে যোগাযোগ করলে সেও বাথরুমে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে জানায়। এরপর তারা স্ত্রীকে লাশটি তারা না পৌছা পর্যন্ত বাসায় রাখার জন্য বলে। কিন্তু স্ত্রী তাদের কথা না শুনে লাশ নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে চকরিয়া পর্যন্ত লাশের গাড়ি পৌঁছলে তারা তার সাথে যোগাযোগ করে লাশসহ গাড়িটি নিয়ে পুনরায় চট্টগ্রাম মেডিকেলের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেন। স্ত্রী কর্তৃক মৃত্যুর সংবাদ তাদের না দেয়া এবং তাদের কথা না শুনে লাশ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু নিয়ে তাদের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
পরে পরিবারের সদস্যরা শোয়েব কিভাবে, কোথায়, কিসের সহায়তায় আত্মাহত্যা করেছে তা জানতে বাসায় যান। স্ত্রী’র দাবি অনুযায়ী শোয়েব যে স্থানে, যেভাবে আত্মহত্যা করেছে বলে বর্ণনা করেছে, তাতে শোয়েবের মৃত্যু রহস্য তাদের কাছে আরো বিস্ময়কর মনে হওয়ায় তারা চট্টগ্রামস্থ বায়েজিদ থানার শরণাপন্ন হন এবং থানার একদল পুলিশ হাসপাতাল পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্ত সম্পন্নের প্রক্রিয়া করেন।
উল্লেখ্য, ব্যাবসায়ীক কারণে শোয়েব পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকত। তার একটি ৮/৯ বছর বয়সি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্ত্রী’র পৈত্রিক এলাকাও একই উপজেলায় বলে জানান স্বজনরা। বিগত একমাস পূর্বে শোয়েবের পিতাও মৃত্যুবরণ করেন। শোয়েবের আত্মহত্যার সংবাদ তার পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা। কারণ তাদের পুরো পরিবার অত্যন্ত ধর্মভীরু। সে কোনভাবেই আত্মহত্যা করতে পারেনা বলে তাদের দাবি। সে কি আত্মহত্যা করেছে, না পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছে তা তদন্তপূর্বক প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান তারা।
এ আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
বায়েজিদ থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ হোসাইনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উল্লেখিত স্থানে শোয়েব নামের একজন মওলানা আত্মহত্যা করেছে সংবাদ পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, লাশটি হাসপাতালে নিয়েছে। ওখান থেকে আবার লাশটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছে জেনে লাশটাকে পুনরায় চট্টগ্রাম নিয়ে আসতে বলি এবং চমেক হাসপাতালেই পুলিশ লাশ পান। বর্তমানে (শুক্রবার দুপুর) লাশটি চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্নের অপেক্ষায় রয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য বলা যাচ্ছে না। তবে স্ত্রী তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছে।