চট্টগ্রাম ১০৮০, মংলা থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দূরে ‘মহাসেন’
এটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কঙবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল (১৪.৩০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.২০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ)। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মাঝারি মাত্রা এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ চার দিন ধরে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও মঙ্গলবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এটি টেকনাফ উপকূলের দিকে এগোচ্ছে।
বিবিসির আবহাওয়া বার্তায়ও একই আভাস দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঝড়টি বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্ব উপকূল ভাগ ও মিয়ানমার অতিক্রম করবে। এ সময় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার সময় ৫ মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কঙবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরসমূহকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে এমন খবরে দেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা টেকনাফে অজানা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
এদিকে কক্সবাজারে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে এটি কোনো ভারী কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি নয়। খুবই স্বাভাবিক বৃষ্টি। বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া নেই।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস এবং রাডার স্টেশন সূত্র জানায়, এ বৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় মহাসেনকে প্রভাবিত করতে পারে। একাধারে বৃষ্টি হলে ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ইতোমধ্যে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’-এর সম্ভাব্য দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় কঙবাজার জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। উপকূলের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে খালি করে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়াও রেড ক্রিসেন্টসহ সব স্বেচ্ছাসেবককে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে বৈঠকে জরুরি শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুদের কথাও বলা হয়। ১১৩টি জরুরি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. কাজল কান্তি বড়ুয়া। জেলা কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল এবং সমন্বয় সেল খোলা হয়েছে।
জেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটি জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।